ছেলে সন্তান লাভের উপায় — ডিম্বপাত কি?

সন্তান ছেলে কিংবা মেয়ে হউক না কেন, সন্তান মা বাবার কাছে বড়ই আদরের। অনেকেই বংশ টিকিয়ে রাখতে ছেলে সন্তান কামনা করে। আবার অনেকেই পরিবারের শান্তি চেয়ে মেয়ে কামনা করেন। বাবারা পায় মেয়ের আদর আর মা পায় ছেলের আদর। এমনটাই আমাদের সমাজে প্রমাণিত।

সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে?

ছেলে/মেয়ে সন্তান লাভের উপায়
ছেলে বা মেয়ে সন্তান লাভের উপায় জানার ক্ষেত্রে জেনে নিতে হবে শুক্রাণুর প্রভাব। যারা জীববিজ্ঞান পড়েছেন, তারা অনেকেই এই প্রক্রিয়াটি সমন্ধে অবগত আছেন। বস্তুত, মেয়েদের শরীরে XX ক্রোমোজোম থাকে এবং ছেলেদের শরীরে থাকে XY ক্রোমোজোম। এক্ষেত্রে X ক্রোমোজোম ধারি শুক্রাণু দ্বারা ডিম্ব নিষিক্ত হবার কারণে সন্তান মেয়ে হবে বলেই বিজ্ঞান অনুযায়ী জানা যায়। আর অন্যদিকে, Y ক্রোমোজোমের কারণে সে ছেলে হয়। তাই সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে তা নির্ভর করে ছেলেদের শুক্রাণুর ওপর। কারণ মেয়েদের ক্ষেত্রে কেবল X ক্রোমোজোমই দেখা যায়। যেখানে ছেলেদের ক্ষেত্রে ক্রোমোজোমের তারতম্য থাকে। তাই বিজ্ঞান মতে, ছেলে বা মেয়ে সন্তান লাভের উপায় স্বামীর (পুরুষের) উপরই কিন্তু বিষয়টি নির্ভর করে।

Y শুক্রাণু তুলনামূলকভাবে অনেক ছোট হলেও বেশ দ্রুতগামী। তবে তারা খুব বেশিক্ষণ জীবিত থাকে না। অন্যদিকে, X শুক্রাণু বেশ বড় কিন্তু ধীর গতির, সেইসঙ্গে এরা একটু বেশ সময় বাঁচে বলেও জানা যায়। ফলত, ছেলে সন্তান চাইলে ছেলেদের Y শুক্রাণু যাতে খুব দ্রুত ডিম্বের কাছাকাছি যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করা উচিত। তাই ডাক্তারদের মতে, নারীর পুত্র সন্তান লাভের ক্ষেত্রে তাঁর যেদিন ডিম্বপাত হচ্ছে সে দিনেই মিলিত হওয়াটা জরুরি। অন্যদিকে আপনি যদি মেয়ে সন্তান চান তবে ডিম্বপাতের দুই থেকে তিন দিন আগে মিলিত হতে হবে।

ডিম্বপাত বা ওভিউলেশন কি?

মেয়েদের রজঃচক্রেরর সময়সীমা পরিমাপ করা হয় একটি রজঃচক্রের প্রথম দিন হতে পরবর্তী রজঃচক্রের প্রথম দিন পর্যন্ত, যা ২৮-৩২ দিনের মধ্যে হয়ে থাকে। তবে কোন কোন নারীর রজঃচক্রেরর সময়সীমা এর চেয়ে অনেক কম বা বেশি হতে পারে। ডিম্বপাতের সময়টা হিসাব করা হয় রজঃচক্র শুরুর ১১ তম দিন থেকে ২১তম দিনের মধ্যবর্তী যেকোন একদিনকে। তা ডিম্বপাত ১১তম দিনেও হতে পারে অথবা ১২তম দিনেও হতে পারে কিংবা ১৬তম দিনেও হতে পারে। অর্থাৎ ১১-২১ তম দিনের যেকোন একদিন। আর এই ১১-২১ তম দিনেরএই সময়সীমাকে বলা হয় fertile time বা উর্বর সময়।

বিঃদ্রঃ— তবে, কিছু ক্ষেত্রে যারা ২৪ দিনের মাসিক চক্রের মহিলা তাদের জন্য ১০ তম দিনে এটি ঘটে থাকে এবং ৩৫ দিনের মাসিক চক্রের মহিলাদের ২১ তম দিনে এটি হতে পারে। মোটকথা: নারীর স্বাস্থ্য বা সুস্থতার উপরও ডিম্বপাতের তারতম্য ঘটে। অর্থাৎ ডিম্বপাত হল সেই সময় যখন নারীদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

ডিম্বপাত বা ওভিউলেশন লক্ষণ:

ডিম্বপাতের সময় জরায়ু থেকে বের হওয়া নিঃসরণে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে। ডিম্বপাতের সময় স্রাবের প্রকৃতি হয় পানির মতো পরিষ্কার, পিচ্ছিল, পাতলা  সূতার মত  এবং পরিমান হয় খুব বেশি- সব মিলিয়ে একে কাঁচা ডিমের সাদা অংশের সাথে তুলনা করতে পারেন আপনি।

বস্তুত, ডিম্বপাত হবার আগেই সব Y শুক্রাণু মারা যায় বলে জানা যায়। ফলে ছেলে সন্তান হবার সম্ভাবনা কম থাকে। কারণ সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র বেঁচে থাকে X শুক্রাণুগুলো। ফলে মেয়ে সন্তান হবার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় বলেই মনে করা হয়। তাই ছেলে না মেয়ে সেই বিষয় নির্ধারণ করতে নজর রাখতে পারেন আপনার মিলিত হওয়ার সময়ের ওপর।

প্রিয় পাঠক-পাঠিকাগণ, আশাকরি; এই পোস্টে ছেলে বা মেয়ে সন্তান লাভের উপায় বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট তথ্য পেয়েছেন। —গণক্কার। 

Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url