ষটকর্ম || মন্ত্র তন্ত্রের আবশ্যক কিছু বিধি
মন্ত্র তন্ত্র প্রয়োগের আগে ষটকর্ম সম্পর্কে জানতে হয়। আপনি যদি ষটকর্ম সম্পর্কে না জানেন, আপনার ষটকর্ম জ্ঞান না থাকে, তাহলে কখনই মন্ত্র তন্ত্র বিদ্যা কাজ করবে না।
এই ষটকর্ম কি?
তন্ত্রশাস্ত্র মতে ষটকর্ম বলতে ছয়টি কর্মকে বোঝায়। ছয়টি কর্মের নাম হচ্ছে:
১ শান্তি কর্ম।
২ বশীকরণ।
৩ স্তম্ভন।
৪ বিদ্বেষণ।
৫ উচ্চাটন।
এবং
৬ মারণ কর্ম।
এবার আসা যাক, ষটকর্মের বিধি-বিধান সম্পর্কে। এই ছয়টি কর্মের আলাদা বিধি-বিধান রয়েছে। সেগুলো হলো এদের আলাদা দেবতা রয়েছে, আলাদা দিক রয়েছে, আলাদা তিথি রয়েছে, আলাদা বার রয়েছে, আলাদা সময় বা ঋতু রয়েছে। যেগুলো আপনাকে পালন করতে হবে।
_________________________
ষটকর্মের দেবদেবী:
শান্তি কর্মের দেবী হলেন— রতি।
বশীকরণের দেবী— বাণী।
স্তম্ভনের দেবী— রমা।
বিদ্বেষণের দেবী— জ্যেষ্ঠা।
উচ্চাটনের দেবী— দুর্গা ।
এবং মারণ কার্যের দেবী— কালী।
তো; যারা যে কাজ করবেন সেই কাজটি করার আগে সেই দেবীকে স্মরণ করে প্রনাম করতে হবে (প্রনাম মন্ত্র মূখস্ত করলে ভালো হয়)। আর যদি আপনার সাধ্য থাকে তাহলে দেবীর পুজো করবেন। পুজো করলে উত্তম কার্য সম্পন্ন হয়।
_________________________
ষটকর্মের ঋতু:
ষটকর্মের ঋতু বলতে বার্ষিক ঋতু বৈচিত্র বোঝায় না। এখানে দিন রাত্রিকে ছয় ভাগ করা হয়েছে।
যেমন, সূর্য উদয়ের পর প্রথম দশ দণ্ড বসন্ত ঋতু, পরের দশ দন্ড গ্রীষ্ম ঋতু, এভাবে ক্রমান্বয়ে বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত ও শীত ঋতু হিসেব করা হয়।
এক দণ্ড সমান ২৪ মিনিট।
অতএব, ১০ দন্ড সমান ৪ ঘন্টা।
একেকটি ঋতু ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বিরাজ করে।
যেমন, সকাল ৬ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত এই ৪ ঘন্টা বসন্ত ঋতু। তারপর ৪ ঘন্টা গ্রীষ্ম ঋতু। তারপর বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত এভাবে চলতে থাকে।
_________________________
কোন ঋতুতে কোন ষটকর্ম করবেন?
হেমন্ত ঋতুতে— শান্তিকর্ম করতে হয়।
বশীকরণ— বসন্ত ঋতুতে।
বিদ্বেষণ— গ্রীষ্ম ঋতুতে।
স্তম্ভন— শীত ঋতুতে।
উচ্চাটন— বর্ষায়।
এবং মারণ কার্য করতে হয় শরৎ ঋতুতে।
_________________________
ষটকর্মের তিথি এবং বার:
শান্তি কর্ম—
বুধ, বৃহস্পতি এবং সোমবার।
দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চমী ও সপ্তমী তিথিতে করতে হয়।
বশীকরণ—
রবি ও শুক্রবার।
নবমী, দশমী, একাদশী, ও অমাবস্যা তিথিতে করতে হয়।
স্তম্ভন কর্ম—
বুধ ও সােমবার
পঞ্চমী ও পূর্ণিমা তিথিতে করতে হয়।
বিদ্বেষণ—
শনি কিংবা রবিবারে পূর্ণিমা তিথি হইলে বিদ্বেষণ কর্ম করতে হয়।
উচ্চাটনকর্ম—
শনিবার
ষষ্ঠী, চতুদ্দশী ও অষ্টমী তিথিতে করতে হয়।
মারণ—
শনিবার ও রবিবার
অষ্টমী ও অমাবস্যা তিথিতে করতে হয়।
_________________________
ষটকর্মের দিক:
চামুন্ডা তন্ত্র বিদ্যায় ষটকর্মের দিক উল্লেখ্য করা হয়েছে যেভাবে; তা হল—
শান্তিকর্ম উত্তর মুখে।
বশীকরণ পূর্ব মুখে।
স্তম্ভন পশ্চিম মুখে।
বিদ্বেষণ দক্ষিণমুখে।
উচ্চাটণ বায়ুকোণে।
এবং মারণ কর্ম করতে হয় নৈর্ঋত মুখে।
_________________________
ষটকর্মের আসন:
শান্তিকর্ম পদ্মাসন
বশীকরণ স্বস্তিকাসন
স্তম্ভন বিকটাসন
বিদ্বেষণ কক্কুটাসন
উচ্চাটন বজ্রাসন
মারণ ভদ্রাসন
এ ছাড়াও কয়েকটি বিশেষ কথা রয়েছে তা হলো। মন্ত্র জপের সংখ্যা গুনতে জপমালা ব্যবহার করুন। যে কয়দিন মন্ত্র চর্চা করবেন সেই কয়দিন আপনাকে মাছ মাংস বা আমিষ খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। স্নান করে শরীর পবিত্র রাখতে হবে। পরিষ্কার পোশাক পরতে হবে। মন থেকে কু চিন্তা ও হিংসা ত্যাগ করতে হবে। এবং অবশ্যই গুরুর অনুমতি নিয়ে কার্য সাধন করতে হবে।
বিঃদ্রঃ গণক্কার এই সাইটের সকল পাঠককে “শান্তি কর্ম” করার জন্য অনুমতি দিয়েছে।
সুন্দর
good
দারুন
শান্তি কর্ম সম্পর্কে জানতে চাই। এবিষয়ে একটি পোস্ট করলে ভালো হয়।