কৃমি রোগের চিকিৎসা ও ঔষধ পথ্য

কৃমি রােগের প্রাদূর্ভাব এদেশে খুব বেশী। এজন্য এ রােগ নিরাময়েরও নানাবিধ ব্যবস্থা অবলম্বিত হয়ে থাকে। সে সবের মধ্যে নিম্নোক্ত উপায়সমূহ উল্লেখ্য।

গিমা শাক: প্রতিদিন গিমা শাক ভাজা দু'তিনবার করে সপ্তাহ খানেক খেলে কৃমি রােগ নিরাময় হয়।

গুলঞ্চের রস: গুলঞ্চ ভিজিয়ে রেখে সেই পানি কয়েকদিন নিয়মিত সকালে এক থেকে দু ঝিনুক পরিমাণে সেবন করলে কৃমি রােগ বিনষ্ট হয়।

ইন্দ্রযবের গুঁড়া: দৈনিক সকালে দুআনা পরিমাণ ইন্দ্ৰযবের গুঁড়া ঠাণ্ডা পানির সঙ্গে কয়েকদিন সেবন করলে কৃমির উপকার হয়।

উচ্ছেপাতার রস+আঁখের চিনি: প্রতিদিন প্রাতঃকালে এক ঝিনুক পরিমাণ উচ্ছেপাতার রস আঁখের চিনির সাথে সেবন করলে ক্রিমি রােগ নিবারণ হয়। ঐ রস এক সপ্তাহ সেবন করা আবশ্যক।

রেড়ির তেল: স্বল্প পরিমাণে রেড়ির তেল সেবন করলে, ক্রিমি মরে পড়ে যায়। এটি অনেকটা জোলাপ ’ জাতীয় ঔষধ।

ভাটির পাতার রস+আঁখের চিনি: এক ঝিনুক ভাটির পাতার রস আঁখের চিনির সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ও বৈকালে দুবার করে এক মাস সেবন করলে ক্রিমি রােগ সমূলে দূর হয়। নতুন অতিরিক্ত ক্রিমিও জমানাে বন্ধ হয়।

ধুতরা পাতার রস+ঘােল: দু'এক ফোঁটা ধুতরা পাতার রস ঘােলের সাথে মিশিয়ে দৈনিক সকালে একবার করে কয়েকদিন পান করলে কৃমি নষ্ট হয়।

পটি: ধুঞ্চে গাছের পাতা, চুনের পানি দিয়ে বেঁটে, কোটে পটি দিলে, ক্রিমি দমন হয় ও তৎসংশ্লিষ্ট রােগও হ্রাস পায়। নিমের পাতা ভাজি নিমের পাতা ভেজে প্রতিদিন দু'বার করে ভাতের সাথে এক সপ্তাহ খেলে কৃমি রােগ বিনষ্ট হয়।

নিমের ছালের গুঁড়া: প্রতিদিন সকালে দুআনা পরিমাণ নিমের ছালের গুঁড়া সামান্য লবণের সঙ্গে দু-তিনদিন সেবন করলে কৃমি মরে বেরিয়ে যায়।  নিমের ছাল ভেজানাে পানি নিমের ছাল কুচিয়ে রাত্রে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সকালে আঁখের চিনি সহ দৈনিক দু'বার ক'রে কয়েকদিন সেবন করলে ক্রিমি নিরাময় হয়।

বাওসের পাতার রস+লবণ: বাওসের কচি পাতা পিষে রস বের করে তার মধ্যে স্বল্প পরিমাণ লবণ দিয়ে মেড়ে প্রতিদিন সকালে আধ থেকে এক ঝিনুক পরিমাণে এক সপ্তাহ খাওয়ালে ক্রিমিরােগ নিরাময় হয়।

বুজ-এর পাতা: বুজ গাচের জালি লাল পাতা আট-দশটি চিবিয়ে খেলে তৎক্ষণাৎ কৃমি দমন হয় ও কৃমিজনিত পেট বেদনা নিবারণ হয়।

কাঁচা হলুদ: প্রতিদিন সকালে বাসি পেটে কাঁচা হলুদ ‘এক কর’ পরিমাণ চিবিয়ে খেলে কৃমি বিনষ্ট হয়, লাবণ্য উজ্জ্বল হয় এবং স্বাস্থ্য সুন্দর হয়।

খেজুরের মুথা: খেজুর গাছের কচি চারার মুথা বা সাদা অংশ কেটে পিষে রস করে শিশুকে কয়েকদিন সকালে বিকালে দু'বার স্বল্প পরিমাণে খাওয়ালে কৃমি নিরাময় হয়।

গুঁড়া হলুদের বড়ি: গুঁড়া হলুদ পানিতে গুলে বড়ি তৈরি করে-দু'টি বড়ি এক সঙ্গে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গিলে খেলে সঙ্গে সঙ্গে কৃমি দমন হয় এবং বয়স্ক ব্যক্তিরও কৃমিজনিত মলদ্বারে চুলকানির উপশম হয়। (পরীক্ষিত ও ফলপ্রদ)

চিরতার পানি: দৈনিক সকালে এক ঝিনুক পরিমাণ চিরতা ভেজানাে পানি পান করলে এক সপ্তাহের মধ্যে কৃমি রােগ দূর হয়।

চিরতার পানি+আঁখের রস: চিরতার পাতা ও শিকড় ভিজিয়ে সেই পানি আঁখের চিনি দিয়ে মেড়ে প্রতিদিন সকালে এক সপ্তাহ যাবৎ খেলে কৃমি নিরাময় হয়।

ডালিমের শিকড়+সুপারির শিকড়+পাল্টে (পালিধা) মাদারের ছাল: ডালিম গাছের শিকড়, সুপারি গাছের কচি শিকড় ও পাল্টে মাদার গাছের ছাল পানি দিয়ে বেঁটে রস করে এক থেকে দু’তােলা পরিমাণ এক সপ্তাহ যাবৎ খাওয়ালে কৃমি রােগ আরােগ্য হয়। (পরীক্ষিত ও ফলপ্রদ)

পাল্টে মাদার+কাঁচা হলুদ+খেজুরের মুথা+চুনের পানি: পাল্টে মাদার গাছের কাচা ছাল, খেজুরের চারার কচি মুথা ও কাচা হলুদ-চুনের পানি দিয়ে পিষে রস করে সেই রস প্রতিদিন সকালে এক ঝিনুক পরিমাণ কয়েকদিন বাসি পেটে খেলে ক্রিমির উপদ্রব দূর হয়। (পরীক্ষিত ও ফলপ্রদ)

যুগী খ্যাতার ভারা: যুগী খ্যাতা নামক লতাজাতীয় ঘাসের শিকড়-বাকড় ও পাতাসহ গাছ বাসি পানি দিয়ে পিষে পেটে ‘ ভারা দিলে কৃমি রােগের উপশম হয়।

শঠির মূল: শঠি গাছের মূল তুলে চাকা চাকা করে কেটে তিন-চার খানা চাকা একত্রে ফুটো ক'রে সুতা ঢুকিয়ে মালা বানিয়ে সেই মালা কৃমি বিকারগ্রস্থ রােগীর গলায় বেঁধে দিলে এবং শুকালে কৃমি বিকার দূর  হয়।

কেরােসিন: কেরােসিন তেল অল্প খেলে কৃমি দমন হয়।

চুনের ভারা: নাভির চার পাশে নেওয়া চুনের (শামুকের ঘন চুন) প্রলেপ দিয়ে নাভির মধ্যে দু'তিন ফোটা কেরােসিন তেল দিলে কৃমি সঙ্গে সঙ্গে দমন হয় এবং কৃমিজনিত পেটে ব্যথা নিরাময় হয়। (পরীক্ষিত ও ফলপ্রদ)। 

Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url