কানপাকা, কানে ব্যথা ও সান্নিক রোগের চিকিৎসা

কান পাকা রােগ আরােগ্যের নিমিত্ত নিম্নোক্ত ঔষধ ব্যবহার্য।

শাঁখের গুঁড়া: শাখার গুড়া কানে কয়েকদিন দিলে কান পাকা রােগ নিরাময় হয়।

লাউ পাতার রস: লাউ-এর কচি পাতা হাতে ডলে রস তৈরী করে সেই রস প্রত্যেক দিন দুতিন বার কানে দিলে শীঘ্রই কান পাকা রােগ নিরাময় হয়। এরূপে কয়েকদিন লাউ পাতার রস কানে দেওয়া আবশ্যক। (পরীক্ষিত ও ফলপ্রদ)।

গাঁদা ফুলের রস: গাঁদা ফুলের রস কানে প্রত্যহ দু'তিনবার করে তিন-চারদিন প্রয়ােগ করলে কান পাকা রােগ আরােগ্য হয়।

আদার রস+মধু+তেল: আদার রস, মধু ও তিলের তেল সমপরিমাণে মিলিয়ে সামান্য গরম করে, দুএক ফোটা মাত্রায় তিন বার করে দু'তিন দিন দিলে কানের ব্যথা আরােগ্য হয়।

ভেন্নার পাতা+আদার রস: ভেন্নার পাতার রস এক ঝিনুক ও আদার রস সিকি. ঝিনুক এক সঙ্গে মিশিয়ে অল্প গরম করে দু'এক ফোঁটা মাত্রায় দৈনিক দু'তিন-চার বার কানে দিলে, দু'তিন দিনে কানে ব্যথার উপশম হয়।

কানের লতিতে একজিমা

শিশুদের ও বালকের কানের লতির পশ্চাৎভাগে এক রকম দাদ জাতীয় চর্মরােগ বা একজিমা দেখা দেয়। ঐ রােগ নিম্নবর্ণিত উপায়ে চিকিৎসা করা হয়:

মলম: পুরানাে আষ্টলির, আকছটির বা মেছাগ’ (মিছওয়াক) গাছের কাণ্ডের গোড়ায় তামাটে রঙের এক রকম পুরু ছত্রাক জন্মে; তাকে কান চাটোই বলে। ঐ ‘কান চাটোই’ আগুন জ্বালানাে উনুনের পাশে রেখে গরম করে শুকিয়ে নিয়ে আগুন দিয়ে পােড়াতে হয়। ভাল করে পােড়াবার পর প্রাপ্ত সাদা ছাই নারকেলের তেলের সঙ্গে মেড়ে মলম তৈরী করে আক্রান্ত স্থানে প্রত্যহ দুতিনবার করে কয়েক দিন লাগালে ঐ রােগ নিরাময় হয়। (পরীক্ষিত ও ফলপ্রদ)

কান-ব্যথা: কানের মধ্যে যে কোন কারণে বেদনা হলে নিম্নোক্ত ঔষধে নিরাময় হয়।

তুলসী পাতার রস: কানের ব্যথা নিরাময়ের জন্য দুএক ফোটা তুলসী পাতার রস সামান্য গরম করে কানে দৈনিক সকালে-বিকালে দু'বার করে কয়েক দিন দিলে কানের বেদনা নিরাময় হয়।

রসুন+সর্ষের তেল: সরিষার তেলের মধ্যে এক কোয়া রসুন ছেচে দিয়ে আগুনের উত্তাপে সামান্য গরম করে সেই গরম তেল কানে দিলে-‘সান্নিক’ বা কানের বেদনা নিবারণ হয়। (পরীক্ষিত ও ফলপ্রদ) (ঠান্ডা লেগে কানে বেদনা হলে তাকে সান্নিক-এর বেদনা বলে) 

কানের মধ্যে শব্দ

কানে কম শােনা: কানের মধ্যে কোন কারণে ভো ভো শব্দ হয়ে কানে কম শুনলে, নিম্নোক্ত ঔষধ ব্যবহার্য।

আপাং-এর ছাই+তিলের তেল: আপাং গাছ পােড়ানাে ছাই তিলের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে, ঐ তেল এক সপ্তাহ যাবৎ মাঝে মাঝে দু'এক ফোটা করে কানে দিলে, কানের মধ্যে ভোঁ ভোঁ শব্দ হওয়া ও কানে কম শােনা রােগ নিরাময় হয়। 

বিঃদ্রঃ সমস্ত চিকিৎসা পদ্ধতিরই নিজস্ব ঔষধ কোষ বিদ্যমান। লোক-চিকিৎসাও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু লােক-চিকিৎসার কোন লিখিত ঔষধ কোষ নেই। বিভিন্ন স্থান থেকে বৈদ্য-কবিরাজের মৌখিক সূত্রে প্রাপ্ত চিকিৎসার একটি সংক্ষিপ্ত ঔষধকোষ এখানে উপস্থাপন করা হল।

Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url