দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা

যাদের দ্রুত বীর্যপাত ঘটে, স্ত্রী সহবাসে তেমনটা সক্ষম নন। যৌন বিষয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকেন। তারাই ধ্বজভঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। দ্রুত এর চিকিৎসা ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে কঠিন যৌন সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। ধ্বজভঙ্গ রোগের অনেক চিকিৎসা রয়েছে তার মধ্যে উত্তম চিকিৎসা হচ্ছে আয়ুর্বেদ বা কবিরাজি চিকিৎসা। এই পোস্টে আমরা ধ্বজভঙ্গ রোগের নয়টি চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করব। এই চিকিৎসা গ্রহণ করলে যেমন ধ্বজভঙ্গ দূর হয় তেমনি দ্রুত বীর্যপাত থেকে চির মুক্তি মিলবে। নিম্নে নির্দেশিত ঔষধগুলো আপনি কবিরাজি দোকান থেকে পেয়ে যাবেন অথবা কোন কবিরাজ এর সাহায্য নিয়ে ঔষধ তৈরি করে নিতে পারেন। এতে করে আপনি পাবেন প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি ঔষধ, যা আপনার শরীরে পার্শপ্রতিক্রিয়া ঘটাবে না। নিম্নের যেকোনো একটি ওষুধ সেবন করে দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগ থেকে চিরস্থায়ী মুক্তি পাবেন। 

বিঃদ্রঃ নিম্নপক্ষে ওষুধ একমাস খেতে হবে। ঔষধ তৈরির আগে পারদ শোধন করে নিতে হবে। অশোধিত পারদ কঠিন ব্যাধির কারণ হতে পারে।

দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা

দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা ফর্মুলা—১
পূর্ণচন্দ্র রস: পারদ চারিতােলা, গন্ধক চারিতােলা, লৌহ আটতােল, অভ্র আটতােলা, রৌপ্য দুইতােলা, বঙ্গ চারিতােলা, স্বর্ণ, তাম্র ও কাংস্য, প্রত্যেক দ্রব্য একতােলা এবং জায়ফল, লবঙ্গ, এলাইচ, দারুচিনি, জীরা, কর্পূর, প্রিয়ঙ্গু ও মুতা, প্রত্যেক দ্রব্য দুইতােলা-পরিমাণে লইয়া, ঘৃতকুমারীর রসের সহিত মর্দন করিবে, তৎপরে ত্রিফলার ক্বাথ ও এরণ্ড মূলের রসের ভাবনা দিবে। তিন দিবসের পরে তাহার চণকপরিমিত বটিকা প্রস্তুত করিবে। পাণের সহিত এই ঔষধ সেবন করিলে, শুক্র, বল, ও আয়ুঃ বর্ধিত হয়; এবং প্রমেহ, বহুমূত্র, ধ্বজভঙ্গ, অগ্নিমান্দ্য, আমবাত, অজীর্ণ, গ্রহণী, অম্লপিত্ত, অরুচি, জীর্ণজ্বর, হৃৎশূল ও বিবিধ বায়ুবিকার প্রশমিত হয়।

দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা ফর্মুলা—২
অষ্টাবক্র-রস: পারদ একতােলা, গন্ধক দুইতােলা, স্বর্ণ এক তােলা, রৌপ্য অর্ধতােলা এবং সীসা, তাম্র, খর্পর ও বঙ্গ, প্রত্যেক দ্রব্য চারি আনা পরিমাণে লইয়া, একত্র বটাঙ্গুরের রসের সহিত এক প্রহর এবং ঘৃতকুমারীর রসের সহিত একপ্রহরকাল মর্দন করিয়া, মকরধ্বজের ন্যায় পাক করিবে। পাকশেষে দাড়িমফুলের ন্যায় ইহার বর্ণ হইয়া থাকে। দুইরতি পরিমাণে এই ঔষধ পাণের রসের সহিত সেবন করিলে, বল, পুষ্টি, মেধা ও কান্তি বর্ধিত হয় এবং বলি-পলিত প্রভৃতি নিবারিত হইয়া থাকে।

দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা ফর্মুলা—৩
শুক্রবল্লভ রস: পারদ, গন্ধক, লৌহ, অভ্র, রৌপ্য ও স্বর্ণমাক্ষিক, প্রত্যেক দ্রব্য অর্ধতােলা ও সিদ্ধিবীজ-চূর্ণ আটতােলা; একত্র সিদ্ধির ক্বাথের সহিত মর্দন করিয়া, একমাষা পরিমাণে বটিকা প্রস্তুত করিবে। অনুপানের সহিত ইহা সেবন করিলে, বীর্য্যস্তম্ভ ও রতিশক্তি বৃদ্ধি হয়।

দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা ফর্মুলা—৪
মম্মথভ্র-রস: পারদ, গন্ধক ও অভ্র, প্রত্যেক দ্রব্য চারিতােলা, কর্পুর ও বঙ্গ—প্রত্যেক দ্রব্য এক এক তােলা, তাম্র অর্ধতােলা, লৌহ দুইতােলা; এবং বিদ্ধড়কবীজ, জীরা, ভূমিকুষ্মাণ্ড, শতমূলী, কুলেখাড়ার বীজ, বেড়েলা, আলকুশীবীজ, আতইচ, জয়িত্রী, জায়ফল, লবঙ্গ, সিদ্ধিবীজ, শ্বেতধুনা ও যমানী, প্রত্যেক দ্রব্য অর্ধভােলা পরিমাণে লইয়া, একত্র জলসহ মর্দন পূর্ব্বক, দুইরতিপ্রমাণ বটিকা প্রস্তুত করিবে। ঈষদুষ্ণ দুগ্ধের সহিত ইহা সেবন করিলে, ধ্বজভঙ্গাদি পীড়া নিবারিত হয়। ইহা রতিশক্তিবর্ধক এবং বল, বর্ণ ও অগ্নির বৃদ্ধিকারক।

দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা ফর্মুলা—৫
মকরধ্বজ রস: শোধিত স্বর্ণের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম পাত একপল, পারদ আটপল ও গন্ধক চব্বিশপল, রক্তবর্ণ-কার্পাসপুষ্পের রস ও ঘৃতকুমারীর রসের সহিত একত্র মর্দন করিয়া, মকরধ্বজের পাকের ন্যায় পাক করিবে। সেই মকরধ্বজ একতােলা; কর্পুর, লবঙ্গ, মরিচ ও জায়ফল, প্রত্যেক দ্রব্য চারিতােলা এবং মৃগনাভি ছয়মাষা, একত্র ' মাড়িয়া, দুইরতি মাত্রায় পাণের রসের সহিত সেবন করিলে, ধ্বজভঙ্গাদি পীড়া প্রশমিত হয়। ইহা কামােদ্দীপক, রতিশক্তিবর্ধক এবং মেধা, কান্তি ও আয়ুর বৃদ্ধিকারক।

দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা ফর্মুলা—৬
কামিনী-বিদ্রাবণ রস: আকরকরা, শুঠ, লবঙ্গ, কুঙ্কুম, পিপুল, জায়ফল, জয়িত্রী ও রক্তচন্দন, প্রত্যেক দ্রব্য দুইতােলা। হিঙ্গুল ও গন্ধক প্রত্যেক দ্রব্য অর্ধতােলা এবং অহিফেন আটতােলা একত্রে জলসহ মর্দন করিয়া, তিন রতিপরিমাণে বটিকা প্রস্তুত করিবে। শয়নের পূর্বে অর্ধপােয়া দুগ্ধের সহিত ইহার একটী বটিকা সেবন করিলে, বীর্য্যস্তম্ভ ও রতিশক্তির বৃদ্ধি হয়।

দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা ফর্মুলা—৭
মহেশ্বর রস: রসসিন্দুর একতােলা, গন্ধক একতোলা, লৌহ চারিতােলা, তাম্র অর্ধতােলা, জারিত সুবর্ণ দুইমাষা, অভ্র চারিতােলা, কর্পূর দুইমাষা এবং বৃদ্ধদারকবীজ, শতমূলী, বেড়েলা, গােরক্ষ-চাকুলে, এলাইচ ও শঙ্খপুষ্পী (ডানকুনী), প্রত্যেক দ্রব্য চারিমাষা পরিমাণে একত্র জলসহ মর্দন করিয়া, একরতি প্রমাণ বটিকা প্রস্তুত করিবে। এই ঔষধ সেবন করিলে, মনুষ্য কন্দর্প-সদৃশ রূপবান হইয়া, সহস্র রমণীর পরিতােষসাধনে সমর্থ হয়।

দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা ফর্মুলা—৮
গন্ধমৃত রস: পারদভস্ম একভাগ ও গন্ধক দুইভাগ (অভাবে হিঙ্গুলােত্থ-রস একভাগ ও শোধিত গন্ধক দুইভাগ), একত্র ঘৃতকুমারীর রসের সহিত মর্দন পূর্ব্বক, মুষামধ্যে রুদ্ধ করিয়া লঘুপুটে পাক করিবে। দুই রতি মাত্রায় ইহা ঘৃত ও মধুর সহিত সেবন করাইবে। এই ঔষধ সেবনান্তে সমূল-ভৃঙ্গরাজচূর্ণ  একভাগ ও চিনি দুইভাগ একত্র মিশ্রিত করিয়া সেবন করিতে হয়। ইহা যৌবন জরা-নিবারক।

দ্রুত বীর্যপাত ও ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা ফর্মুলা—৯
শ্রীকামদেব রস: রক্ত কার্পাসের রসের সহিত একপল পারদ ও দুইপল শোধিত গন্ধক একত্র মর্দন করিয়া, 'একটা কাচকুপীর ভিতর পুরণ করিবে। পরে সােহাগা দ্বারা তাহার মুখ বন্ধ করিয়া, বালুকাযন্ত্রে দৃঢ়রূপে স্থাপন পুর্ব্বক সমস্ত দিন-রাত্রি ইহা অগ্নিতে পাক করিবে; শীতল হইলে উত্তোলন করিয়া, তাহার মধ্য হইতে হিঙ্গুলের ন্যায় রক্তবর্ণ সঞ্চিত ভস্ম গ্রহণ করিবে। একমাষা পরিমাণে ঘৃত ও মধুর সহিত ইহা সেবন করিয়া, তদনন্তর দুগ্ধ, গুড়, ঘৃত, কাজলী-ইক্ষু, চিনি, দ্রাক্ষা, খেজুর ও মৌলফল ভক্ষণ করিতে হয়। পিত্তাধিক্যে ত্রিফলা ও মধুর সহিত ইহা সেবন করিতে হয়; এবং বাত বেদনা থাকিলে, নিসিন্দা পাতার রস অনুপান ব্যবস্থয়। ইহাতে সকল রোগ বিনষ্ট হয় এবং রােগী নূতন কলেবর ধারণ করে । একবেলা দুগ্ধের সহিত ইহা সেবন করিলে, বন্ধ্যা ও মৃতবৎসা পুত্রবতী হয়। 

Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url