শুক্রতারল্য ও ধ্বজভঙ্গ রোগের ঔষধ চিকিৎসা

যারা অতিরিক্ত সহবাস বা বীর্যপাত ঘটায় কিন্তু সেই অনুযায়ী পুষ্টিকর খাবার বা বাজিকরণ ঔষধ সেবন করেন না, তাদের শুক্রতারল্য বা ধজভঙ্গ রোগ হয়ে থাকে। নিম্নে ধ্বজভঙ্গ ও শুক্রতারল্য দূর করার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কার্যকরী ঔষধ ও তার ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা করা হলো। যা আপনি বাড়িতে নিজেই তৈরি করতে পারবেন। এই ঔষধ শরীরে বল বৃদ্ধি এবং যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে। সকল ঔষধের দ্রব্যাদি কবিরাজি দোকান থেকে ক্রয় করতে পারবেন অথবা কোন কবিরাজের সহযোগিতা নিয়ে ওষুধগুলি তৈরি করে নিতে পারেন।

 

শুক্রতারল্য ও ধ্বজভঙ্গ রোগের আয়ূর্বেদীয় চিকিৎসা।  ঔষধ ফর্মুলা—১।

নারসিংহ চূর্ণ: শতমূলীচূর্ণ দুইসের, গােক্ষুরবীজ দুইসের, বারাহীকন্দ (চুবড়ীআলু) আড়াইসের, গুলঞ্চ তিনসের দুইছটাক, ভেলাচুর্ণ চারিসের, চিতামূলচূর্ণ সওয়া সের, তিলতণ্ডুল দুইসের, ত্রিকটু-চুর্ণ (মিলিত) একসের, চিনি আটসের তিনপােয়া, মধু চারিসের ছয়ছটাক, ঘৃত দুইসের তিনছটাক এবং ভূমিকুণ্ডের চূর্ণ দুইসের; একত্র মিশ্রিত করিয়া ধৃতভাণ্ডে রাখিবে। ইহা চারিআনা পরিমাণে একমাস কাল সেবন করলে, আঠারপ্রকার উদররোগ, ভগন্দর, মূত্রকৃচ্ছ, গৃধ্রসী, হলীমক, ক্ষয়, পাঁচ প্রকার কাস, আশী প্রকার বাতজ ব্যাধি, চল্লিশপ্রকার পিত্তজ ব্যাধি, বিংশতি প্রকার শ্লেষ্মজ ব্যাধি, সন্নিপাতজ ব্যাধি ও অর্শঃ প্রভৃতি বহুবিধ রােগ বিনষ্ট হয় এবং ইহা দ্বারা জরা, বলি, পলিত ও খালিত্যাদি রােগের উপশম হয়ে, বল, বীর্য্য ও ইন্দ্রিয়শক্তি পরিবর্ধিত হয়।

শুক্রতারল্য ও ধ্বজভঙ্গ রোগের আয়ূর্বেদীয় চিকিৎসা।  ঔষধ ফর্মুলা—২।
চন্দ্রোদয় মকরধ্বজ: জায়ফল, লবঙ্গ, কর্পূর ও মরিচ, “প্রত্যেক দ্রব্য একতােলা, স্বর্ণ দুই আনা, মৃগনাভি দুই আনা এবং রসসিন্দুর চারিতােলা চারি আনা; একত্র মাড়িয়া, চারিরতি পরিমাণে বটিকা প্রস্তুত করিবে। মাখন, মিছরি বা পাণের রস প্রভৃতি অনুপানসহ এই ঔষধ সেবন করলে, বিবিধ পীড়ার শান্তি হয় এবং বল, বীর্য্য ও অগ্নির বৃদ্ধি হয়ে থাকে।

শুক্রতারল্য ও ধ্বজভঙ্গ রোগের আয়ূর্বেদীয় চিকিৎসা।  ঔষধ ফর্মুলা—৩।
বৃহৎ চন্দ্রোদয় মকরধ্বজ: শশাধিত-সূক্ষ্ম-স্বর্ণপত্র একপল ও শশাধিত পারদ আটপল, এই উভয়দ্রব্য একত্র উত্তমরূপে মর্দন পূর্বক, তাহার সহিত যােলপল গন্ধক মিশ্রিত করিয়া কজ্জলী করিবে এবং তাহাতে রক্তবর্ণ কার্পাসের পুষ্প ও ঘৃতকুমারীর রসের ভাবনা দিয়া, ছায়ায় শুষ্ক করিয়া লইবে। তৎপরে এইসমস্ত দ্রব্য সমতল বােতলের মধ্যে সংস্থাপন করিয়া বােতলের মুখে একখণ্ড খড়িমাটী চাপা দিয়া, বালুকাপূর্ণ হাড়ীর মধ্যে উর্ধমুখে এমনভাবে বসাইবে, যেন বােতলের গলা পর্যন্ত বালুকাপূর্ণ থাকে। এই যন্ত্রে তিনদিন ক্রমাগত অগ্নি জ্বাল দিবে। পাকশেষে শীতল হইলে, বােতলের গলদেশে লালরঙ্গের যেসকল ঔষধ সংলগ্ন হইবে, তাহা বাহির করিয়া লইবে। এই ঔষধ একপল, কপূর চূর্ণ চারিপল, জায়ফল, মরিচ ও লবঙ্গ, প্রত্যেক দ্রব্য চারিপল এবং মৃগনাভি অর্ধতােলা, এইসকল দ্রব্য একত্র মাড়িয়া লইবে। এই ঔষধ দুইরতি পরিমাণে পাণের সহিত সেবন করিবে।
পথ্য: ঘৃত, ঘনা বর্তিত দুগ্ধ, মাংস ও পিষ্টক প্রভৃতি। ইহা সেবন করলে, নানাবিধ রােগ বিনষ্ট হয়ে, রতিশক্তির অত্যধিক বৃদ্ধি হয়; সুতরাং ইহা প্রমদাগণের গর্ব্বনিবারক।

শুক্রতারল্য ও ধ্বজভঙ্গ রোগের আয়ূর্বেদীয় চিকিৎসা।  ঔষধ ফর্মুলা—৪।
নাগবল্যাদি চূর্ণ: পাণের মূল, বেড়েলার মুদ্র, মূর্ব্বামূল, জয়িত্রী, জায়ফল, মুরামাংসী, আপাংবীজ, কাকোলী, ক্ষীরকাকোলী, কক্কোল, বেণামূল, যষ্টিমধু ও বচ, ইহাদের প্রত্যেকের সমভাগ চূর্ণ একত্র মিশ্রিত করিয়া,। চারি আনা মাত্রায়, শয়নের অর্ধঘণ্টা পূর্ব্বে, কিঞ্চিৎ দুগ্ধের সহিত ইহা সেবন করলে, বীর্য্যস্তম্ভ হয়।

শুক্রতারল্য ও ধ্বজভঙ্গ রোগের আয়ূর্বেদীয় চিকিৎসা।  ঔষধ ফর্মুলা—৫।
অর্জকাদি বটিকা: বাবুই তুলসীর মূল, চোরপুষ্পীর মূল, নিসিন্দার মূল, কেশুরের মূল, জায়ফল, লবঙ্গ, বিড়ঙ্গ, গজপিপ্পলী, দারুচিনি, তেজপত্র, এলাইচ, নাগেশ্বর, বংশলােচন, অনন্তমুল, তালমূলী, শতমূলী, ভূমিকুষ্মাণ্ড ও গােঙ্গুরবীজ, এইসমুদায় দ্রব্য সমপরিমাণে লয়ে, বাবলার আঠার সহিত মর্দন পূর্ব্বক একমাষা পরিমাণে বটিকা প্রস্তুত করিবে। উষ্ণ দুগ্ধ অথবা সুরামণ্ড অনুপানের সহিত ইহা সেবন করলে, বীর্য্যস্তম্ভ ও শুক্রবৃদ্ধি হয়ে থাকে।

শুক্রতারল্য ও ধ্বজভঙ্গ রোগের আয়ূর্বেদীয় চিকিৎসা।  ঔষধ ফর্মুলা—৬।
সুরসুন্দরী গুড়িকা: অভ্র, স্বর্ণমাক্ষিক, হীরক, লৌহ, স্বর্ণভস্ম ও রসসিন্দুর প্রত্যেক দ্রব্য সমপরিমাণে লয়ে, হিজলের রসের সহিত মাড়িবে, এবং শুষ্ক হইলে পুটপাকে পাক করিবে। ইহা মুখে ধারণ করিয়া স্ত্রী-সঙ্গম করলে, শুক্রস্তম্ভ এবং বলবীর্যের বৃদ্ধি হয়। ইহা বয়ঃস্থাপক।

উপরের যে কোন একটি ওষুধ তৈরী করে সেবন করলে শুক্রতারল্য ও ধ্বজভঙ্গ রোগ থেকে নিরাময় ও মুক্তি পাওয়া যায়। এইসব ঔষধ খেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়। নিস্তেজ লিঙ্গ সবল হয়। 

Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url