বাড়ি থেকে বাস্তুর দোষ দূর করার উপায় ও দিক নির্ধারণ

এক সুন্দর এবং দোষমুক্ত বাড়িই প্রত্যেক ব্যক্তিই কামনা করে থাকে। কিন্তু বাস্তু বিজ্ঞানের পর্যাপ্ত কিছু অশুভ তত্ত্ব অথবা তাতে বাস্তু দোষের সমাবেশ দেখা যায়। তার ফলে গৃহস্বামী বিভিন্ন ভাবে আর্থিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়ে। বাড়ি তৈরী হয়ে যাবার পর আবার তা ভেঙে নতুন করে তৈরী করে। বাস্তু দোষ দূর করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। এর জন্যে আমাদের দেশের ঋষি মুনিরা নিজের বাড়িটি না ভেঙে এই দোষ থেকে মুক্তি পাবার জন্য কিছু প্রতিবিধানের কথা বলেছেন। তাঁরা বলেছেন যে, প্রকৃতির বহুমূল্য সম্পদ সূর্যের কিরণ, হাওয়া এবং পৃথিবীর চুম্বকীয় শক্তি ইত্যাদির সঠিক প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন। এখানে বাস্তুদোষ নিবারণের জন্য কিছু প্রতিবিধানের কথা বলা হয়েছে। যা নিজের মনে করে বিভিন্ন দিকের সাথে যোগ হওয়া দোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

বাড়ি থেকে বাস্তুর দোষ দূর করার দিক নির্ধারণ:

ঈশান দিক

যদি আপনার বাড়ির ঈশান ক্ষেত্রের উত্তর অথবা পূর্ব দিকের দেওয়াল কাটা হয়ে থাকে তবে সেই দিকের দেওয়ালের কাটা অংশটিতে একটা বড় কাঁচ লাগান। তার ফলে বাড়িটায় ঈশান ক্ষেত্রটি সাঙ্কেতিক দিক থেকে বাস্তু দোষ মুক্ত হয়ে যাবে।

যদি বাড়িটির ঈশান দিকটি কাটা হয়ে যায় অথবা কোন অন্য কোন দিক তার থেকে বড়ো হয় তবে কোন সাধু পুরুষ, অথবা আপনার গুরু অথবা বৃহস্পতি গ্রহ অথবা ব্রহ্মাজীর কোন ছবি অথবা মূর্তি বা অন্য প্রতীক চিহ্ন ঈশান কোণের দিকে রাখুন। যদি আপনি শুরুর সেবা করতে পারেন তবে তা সর্বোত্তম উপায় হবে। বৃহস্পতি দেব হল ঈশান কোণের স্বামী বা প্রধান ব্যক্তি এবং তিনি দেবতাদেরও শুরু। যদি আপনার ঈশান ক্ষেত্রে অশুভ প্রভাব দূর করার জন্য কোন সাধুপুরুষের হাতে তৈরী বেসনের বরফি বা লাড্ডুর প্রসাদ সকলের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে।

ঈশান ক্ষেত্রটি কোন গরম জলের জায়গা, কুয়ো অথবা খাবার জলের কোন অন্য স্রোতের কারণে এটি একটি উৎকৃষ্ট স্থান। যদি এখানে জল থাকে তবে এই স্থানে চিনি ও মাটির একটা পাত্রে জল এবং তুলসী গাছ অথবা ফুলের তোড়া অথবা একটা পাত্রে ফুলের পাপড়ি এবং জল রাখুন। শুভ ফল লাভের জন্যে জল এবং ফুল প্রত্যেকদিন আপনাকে পালটাতে হবে।

আপনার শয়ন কক্ষের ঈশান দিকের দেওয়ালে খাবারের খোঁজে উড়ছে এমন শুভ পাখীর একটা সুন্দর ছবি আটকান রোজগার করার জন্য বাইরে বেরোনোর সময় ভয় পাচ্ছে বা সঙ্কোচ করছে এমন লোকের আশ্চর্যজনক প্রভাব ফেলার এই ছবিটি অকর্মণ্য লোকের ওপর নতুন উৎসাহ ও শক্তির সঞ্চার করবে।

বরফে ঢাকা কৈলাস পর্বতে ধ্যানস্থ যোগী মুদ্রায় বসে আছেন মহাদেব, শিবের এমন ফোটো, ছবি অথবা মূর্তি স্থাপন করুন, যেখানে ওনার মাথার ওপরে চন্দ্রমা আছেন এবং লম্বা জটার থেকে মা গঙ্গা বেরিয়ে আসছেন। ঈশান কোণে নিয়মনীতি মেনে বৃহস্পতি যন্ত্রের স্থাপনা করুন।

পূর্ব দিক

যদি নব নির্মিত বাড়িটির পূর্ব দিকের দেওয়ালটা কাটা হয় তবে পূর্ব দিকের দেওয়ালে একটা বড় কাঁচ লাগান। তার ফলে নব নির্মিত বাড়িটি পূর্ব ক্ষেত্রটি বাস্তু দোষ মুক্ত হয়ে নতুন পথের দিশারী হবে।

যদি নব নির্মিত বাড়িটির পূর্ব দিকের দেওয়ালটা কেটে ফেলার অবস্থা এসে যায় তখন ওখানে সাত ঘোড়ার রথে চড়া ভগবান সূর্যদেবের ছবি, মূর্তি অথবা কোন চিহ্ন সেখানে আটকান। 

সূর্যোদয়ের সময় ভগবান সূর্যদেবকে জলের অর্ঘ্য দিন। অর্থ দেওয়ার সময় সাতবার গায়ত্রী মন্ত্র জপ করুন। পুরুষরা নিজের বাবা এবং স্ত্রীরা নিজেদের স্বামীর সেবা করবেন।

বাড়ির প্রত্যেক ঘরে সকালে সূর্যোদয়ের প্রথম কিরণের প্রবেশে জন্য একটা জানলার খুবই প্রয়োজন। যদি সম্ভব না হয় তবে পূর্বদিকে হলুদ আলো দেয় এমন বাহু জ্বালান।

বাড়ির পূর্ব দিকে লাল, সোনালী এবং হলুদ রঙের প্রয়োগ করুন। পূর্ব দিকের মাটি খুঁড়ে জলের পুকুর তৈরী করুন এবং তাতে লাল পদ্মফুল ফোটান অথবা পূর্ব দিকে বাগান তৈরী করে তাতে লাল গোলাপের গাছ লাগান।

আপনার বাড়ির শোয়ার ঘরের পূর্ব দিকের দেওয়ালে সূর্য উদয় হচ্ছে এমন ছবি ও তার সাথে একসাথে উড়ে যাচ্ছে এমন হাঁসের, তোতার, ময়ূরের ইত্যাদির অথবা খাবারের খোঁজে নিজের ঘর ছাড়ার জন্যে তৈরী হচ্ছে এমন শুভ পাখীর ছবি আপনার শোয়ার ঘরের পূর্বদিকের দেওয়ালে আটকান। অকর্মণ্য এবং রোজগারের জন্যে বাইরে যাচ্ছে এমন লোক যারা বাইরে বেরোনোর সময় সঙ্কোচ করছে বা ভয় পাচ্ছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে জাদুর লাঠির সমান কাজ করবে।

হনুমান বা বাঁদরদের গুড় এবং ভাজা ছোলা খাওয়ান। পূর্বদিকের সূর্য যন্ত্র স্থাপন করুন নিয়মনীতি মেনে। যা আপনার বাড়ির পক্ষে খুবই মঙ্গলজনক হবে।

আগ্নেয় দিক

যদি আপনার বাড়ির আগ্নেয় কোন পূর্ব দিকের থেকে বড়ো হয় তবে তা এমনভাবে কার্টুন সেটি যেন বর্গাকার অথবা আয়তাকারের মতো তৈরী করুন।

পরিষ্কার বালি এবং মাটি দিয়ে আগ্নেয় ক্ষেত্রের বা দিকের সব গর্ত এমনভাবে ভর্তি করে দিন যাতে ঐ সব জায়গাগুলো বা স্থানগুলো ঈশান কোণ এবং বায়ু কোণের থেকে উঁচু হয় কিন্তু নৈকত কোণ থেকে যেন নীচু হয়।

যদি আপনার বাড়ি তৈরী করার সময় কোনভাবে আগ্নেয় কোনটি কাটা হয়ে গিয়ে থাকে অথবা পর্যাপ্ত রূপে খোলা না থাকে তবে আপনি আগ্নেয় দিকে একটা লাল রঙের প্রদীপ অথবা বার জ্বালান যা অগ্নি দেবতার সম্মানে কাজ করার সময় কম সে কম এক প্রহর অথবা তিন ঘন্টা পর্যন্ত জ্বালিয়ে রাখুন।

যদি আপনার বাড়ির আমেয় ক্ষেত্র অথবা আগ্নেয় কোনটি কাটা হয়ে গিয়ে থাকে তবে আপনি আগ্নেয় কোণে অগ্নি দেবের ছবি, মূর্তি বা সঙ্কেত বা কোন চিহ্ন রাখতে পারেন। ভগবান গণেশের কোন ছবি বা মুর্তিও রাখলে ও ঐ দোষটি দূর করা যায়ে। অগ্নিদেবের স্তুতি করে ঋগবেদে উল্লিখিত পবিত্র মন্ত্রটি উচ্চারণ করুন।

আগ্নেয় কোনো দোষ থাকলে আপনার বাড়িটিকে সেই দোষ থেকে মুক্ত করাতে চান তবে সেখানে যাবার তৈরী হয় এমন ফল ও সবজি যেমন—পালংশাক, তুলসী, গাজর ইত্যাদি এবং আদা, মরিচ, মেঘী, হলুদ, পুদিনা, কড়ীপাতা সেখানে ফোটাতে পারেন। অথবা মানী প্লাটও লাগাতে পারেন।

আগ্নেয় দিক থেকে যে সূর্য কিরণ আসছে সেটি যদি কোন গাছের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় তবে সেই গাছগুলো কেটে ফেলুন। এই দিকে কোন উঁচু গাছ লাগাবেন না। আগ্নেয় কোণের অধীশ্বর হলেন শুক্র গ্রহ যা দাম্পত্য সম্বন্ধের পক্ষে খুবই হিতকর হয়। তাই এই দিতের বাস্তু দোষ দূর করার জন্যে আপনি আপনার জীবন সাথীর প্রতি প্রেম ও আদর ভাব বজায় রাখুন।

বাড়ির স্ত্রীদের নতুন রেশমী কাপড়, নানারকম সৌন্দর্য প্রসাধন সামগ্রী, নিজের সুন্দর রাখার প্রসাধন দ্রব্য, এবং গহনা ইত্যাদি দিয়ে সবসময় আনন্দে রাখার চেষ্টা করুন। ইহা একটি সর্বোত্তম উপায়।

প্রত্যেক শুক্রবার গরুকে গমের আটা, চিনি এবং দই দিয়ে তৈরী পেড়া করে খাওয়ান। প্রতিদিন রান্নাঘরে তৈরী প্রথম রুটি গরুকে খাওয়ান। দোষমুক্ত আগ্নেয় কোণে গরু বাছুরে একটা সাদা মার্বেলের তৈরী মূর্তি বা ছবি এত উঁচুতে লাগান যে, যা সহজেই দেখতে পাওয়া যায়।

বাড়ির আগ্নেয় কোণে শুরু যন্ত্রটি নিয়মনীতি মেনে স্থাপন করুন যা আপনার বাড়ির পক্ষে খুবই মঙ্গলজনক হবে।

দক্ষিণ দিক

যদি বাড়ির দক্ষিণ দিকের জায়গাটি বড়ো হয় তবে তা কেটে কেটে তার শেষের দিকে জায়গাটি বর্গাকারে বা আয়তাকারে তৈরী করান। কাটা জায়গাটি বিভিন্ন প্রকারে উপযোগে আসতে পারে।

যদি বাড়ির দক্ষিণ দিকের উঁচু বরাবর বা তার থেকেও বেশি খোলা জায়গা থাকে, তবে সেখানে উঁচু গাছ অথবা ঘন ফুলের বন তৈরী করুন। 

বাড়ির দক্ষিণ দিকে সিমেন্টের বড় এবং ভারী গামলা যা ঘরের মধ্যে রাখা যাবে এমন ভারী প্রকৃতির গাছ লাগানো যেতে পারে। যমরাজ অথবা মঙ্গল গ্রহের মন্ত্র পাঠ করতে পারেন।

বাড়ির দক্ষিণ দিকের অধীশ্বর হলেন মঙ্গল গ্রহ। তাঁকে প্রসন্ন রাখার জন্য ঘরের বাইরে লাল রঙ প্রয়োগ করুন। দক্ষিণ দিকের দোষের কারণে অগ্নিদেবকে খুব সাবধানে ব্যবহার করুন এবং অগ্নি তত্ত্ব প্রধান লোকেদের প্রতি উচিত আদর ভাব দূর করা যেতে পারে।

বাড়ির দক্ষিণ দিকে দেওয়ালে হনুমানজীর লাল রঙের ছবি আটকালে খুবই মঙ্গলজনক হতে পারে। আপনার বাড়ির দক্ষিণ দিকে মঙ্গল যন্ত্রটি নিয়মনীতি মেনে স্থাপন করলে বাড়ির পক্ষে খুবই শুভ ফল লাভ করা যাবে।

নৈঋত দিক

বাড়ির নৈঋত কোনটি যদি বড়ো হয় তবে অসহ্যকর সব সমস্যার সৃষ্টি হতে থাকে। যদি ঐ ক্ষেত্রটি কোনভাবে বাড়ি তৈরি সময় বড়ো হয় তবে নৈঋত দিকটি বর্গাকার বা আয়তাকার তৈরী করা।

বাড়িতে যদি ঝুলন্ত বাগান তৈরি করতে চান অথবা ভারী মূর্তি রাখার জন্য নৈঋত কোনটি হল সর্বোত্তম স্থান। যদিও এই জায়গাটি প্রাকৃতিক রূপের দিক থেকে উঁচু বা টালার মতো হয়, তবে এই দিকে উঁচু বাড়ি অথবা পাহাড় আছে তবে এই উঁচু হয়ে ওঠা জায়গাটিকে যে কোন ভাবে ছেড়ে দিন।

যদি আপনার বাড়ির নৈঋত দিকের উঁচু বরাবর অথবা প্রচুর খোলা জায়গা আছে তবে ওখানে বড় বড় গাছ অথবা ঘন ফুলের বাগান করুন। আরও যদি পারেন তো ঘরের ভেতর সিমেন্টের গামলা তৈরী করে ভারী ভারী বা বড় বড় গাছ লাগান।

আপনার বাড়ির নৈঋত দিকে মাটির তলায় অথবা উঁচু দিকে জলের ফোয়ারা তৈরী করান।

আপনার বাড়ির মঙ্গলের জন্য রাহুর মন্ত্র নিজে জপ করুন অথবা কোন যোগ্য ব্রাহ্মণকে দিয়ে জপ করান।

আপনার প্রিয়জনের শ্রাদ্ধের কাজ যথাসম্ভভ শ্রদ্ধা সহকারে সম্পাদন করুন এবং তাঁদের আত্মাকেও তুষ্ট করুন। নৈঋত দিকের দক্ষিণ দিকের দেওয়ালে আপনার পরিবারের মৃত সদস্যের একটা ছবি আটকান যার গলায় ফুলের মালা দেওয়া আছে।

যারা মিথ্যেকথা বলে, খারাপ কাজ করে, একটুতেই খুব রেগে যায় অথবা সমাজ বিরোধী লোকদের সাথে বন্ধুত্ব একেবারেই করবেন না। নিজের বলা কথার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন।

তামা, রূপো, সোনা অথবা স্টীলের তৈরী পয়সা অথবা কয়েন ও নাগ-নাগিনীর জোড়া নিয়ে প্রার্থনা করে সেগুলো নৈঋত দিকে দাবিয়ে দিন।

নৈঋত দিকের অধীশ্বর হলেন রাহু। তাই আপনার বাড়ির নৈঋত দিকের রাহু যন্ত্রের স্থাপন করুন নিয়মনীতি মেনে।

পশ্চিম দিক

যদি আপনার বাড়ির পশ্চিম দিকটা বড়ো হয়ে থাকে তবে তা কেটে বর্গাকার অথবা আয়তাকার ভাবে তৈরী করান।

যদি আপনার বাড়ির পশ্চিম দিকের উচুঁ বরাবর বা অনেক দূর পর্যন্ত খোলা জায়গা থাকে, তবে সেখানে বড় বড় গাছ বা ফুলের ঝোপ তৈরী করান। এর থেকেও বেশী আপনি আপনার বাড়ির পাশে বাগানে লাগানোর জন্য বিভিন্ন রকমের গাছ—যেমন ইন্ডোর পাম, রবাড় প্লান্ট ও অমব্রেলা ট্রি ইত্যাদি, তাছাড়া কংক্রীটের বড় এবং ভারী গামলাতেও আপনি এইসব গাছ লাগাতে পারেন।

বাড়ির পশ্চিমদিকের মাটির তলায় বয়ে যাওয়া জলের স্রোত অথবা জলের ফোয়ারাও লাগাতে পারেন।

পদ্ম পুরাণে উল্লিখিত নীল শনির স্তোত্র অথবা শনিদেবের কোন অন্য মন্ত্র জপ করুন এবং দিকের অধিপতি শ্রীবরুণদেবের কাছে বাড়ির মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করুন। 

সূর্যাস্তের সময় প্রার্থনা ছাড়া অন্য কোন শুভ কার্য না করাই ভালো। 

পশ্চিম দিকে শনি যন্ত্রের স্থাপন করুন নিষ্ঠা সহকারে এবং নিয়মনীতি মেনে।

বায়ু-দিক

যদি আপনার বাড়ির বায়ু-দিকের ভাগটা বড়ো হয় তবে তা বর্গাকার অথবা আয়তাকারে তৈরী করুন অথবা ঈশান দিকটা একটু বাড়িয়ে নিন।

যদি আপনার বাড়ির বায়ু দিকটা ভাঙ্গা থাকে তবে সেখানে আপনি মারুতিদেবের ছবি, মূর্তি ও কোন চিহ্ন লাগাতে পারেন। তাছাড়া আপনি পবনপুত্র হনুমানের ছবি, মূর্তি ও রাখতে পারেন। তাছাড়া ও আপনি এই দিকে পূর্ণিমার দিনের চন্দ্রের ছবি ও আপনি আটকাতে পারেন। আপনি বায়ু দিকের দোষ থেকে অনেকটা রক্ষা পাবেন।

আপনি আপনার বাড়িটিকে বায়ু দিকের দোষ থেকে রক্ষা করতে চাইলে আপনি বায়ুনের অথবা চন্দ্রের মন্ত্র জপ করতে পারেন। তাছাড়া ও আপনি হনুমান চল্লিশা শ্রদ্ধা সহকারে পাঠ করলে আপনার সবদিক থেকে মঙ্গল হবে।

পূর্ণিমার রাত্রে আপনি যে খাবারগুলো খাবেন তাতে প্রথমে চাঁদের কিরণ পড়তে দিন। তারপর আপনি সেই খাবারগুে খান।

আপনি আপনার তৈরী বাড়ির বাইরে যদি খোলা জায়গা থেকে থাকে তবে সেখানে এমন গাছ লাগান যার মোটা চকচকে পাতাগুলো হাওয়াতে যেন নাচতে থাকে।

আপনার বাড়ির বায়ু দিকে যে সব ঘর তৈরী করেছেন সেখানে। আপনি তাজা অথবা টাটকা ফুলের তোড়া রাখুন।

আপনার বাড়ির বায়ু দিকে একটা ছোট ফোয়ারা অথবা মাছের অ্যাকোরিয়াম রাখুন। আপনার মাকে যথাসম্ভব শ্রদ্ধা ভক্তি ও সম্মান করুন। সকালে

উঠে তাকে প্রণাম করে আর্শীবাদ নিন এবং কোন শুভ সময় দেখে তাকে ক্ষীর খাওয়ান।

প্রতিদিন সকালে, বিশেষ করে সোমবার গঙ্গাজলে কাঁচা দুধ মিশিয়ে শিবলিঙ্গকে স্নান করান এবং মনের ভক্তি সহকারে শিব পাঠ করুন।

বায়ু দিকে মারুতি যন্ত্রের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করুন এবং চন্দ্র যন্ত্রের স্থাপন করুন।

উত্তর দিক

যদি আপনার বাড়ির উত্তর দিকের ভাগ কাটা হয়ে গিয়ে থাকে তবে সেখানকার উত্তর দিকের দেওয়ালে একজন বড়ো ব্যক্তির সমান কাঁচ লাগান।

যদি আপনার বাড়ির উত্তর দিকের ভাগটায় কোন বড়ো গর্ত থাকে অথবা উঁচু নিচু হয়ে থাকে তবে আপনি এই দিকে দেবী লক্ষ্মী অথবা চন্দ্রের ছবি মূর্তি অথবা কোন সঙ্কেত চিহ্ন আটকান। মা লক্ষ্মী যেন ছবিতে পদ্মফুলের ওপর বিরাজমান থাকেন এবং যেন তাঁর দুপাশ থেকে সোনার মুদ্রাগুলি পড়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে।

যদি আপনার বড়ির উত্তর দিকটা ঠিক না থাকে তবে আপনি একটা কাজ করুন। তা হল বিদ্যার্থীদের এবং সন্ন্যাসীদের উপযুক্ত অধ্যায়ন সামগ্রী দান করে সহায়তা করুন। উত্তর দিকের অধিপতি হলেন বুধ। তাই বুধের জন্য অধ্যায়ন সামগ্রীর বিচার করা হয়। আপনার বাড়ির উত্তর দিকের দেওয়ালে হাল্কা সবুজ রঙের পেইন্ট করান। 

আপনার বাড়ির উত্তর দিকের দেওয়ালে টিয়া পাখির ছবি আটকান। যে সব বাচ্চা পড়াশুনায় দুর্ব্বল তাদের জন্য ম্যাজিকের কাজ করবে।

আপনার বাড়ির উত্তর দিকে বুধ যন্ত্রের স্থাপনা করুন নিয়মনীতি মেনে। তারপর আপনি কুবের যন্ত্র অথবা লক্ষ্মী যন্ত্রের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে স্থাপনা করুন।

এইভাবে উপরে বর্ণিত সব উপায়গুলো সহজ ও সরল। এই উপায়গুলো ঠিকমতো প্রয়োগ করতে পারলে আপনার জীবন আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। যা আপনাকে সঠিক মুখের সন্ধান দেবেন।
Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url