শিশু চিকিৎসায় ত্রিপুরা উপজাতির প্রচলিত মন্ত্র

প্রিয় পাঠক, এই প্রবন্ধের যে মন্ত্র গুলো আমরা চর্চা করব, সবগুলো ত্রিপুরা মন্ত্র। বিশেষ করে ত্রিপুরায় এই মন্ত্র গুলো বেশি ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ ত্রিপুরা জনজাতি এই মন্ত্র গুলোর ব্যবহার করে থাকেন এবং এই মন্ত্র গুলো এখনো চলমান বা প্রচলিত। ত্রিপুরা উপজাতির তন্ত্র মন্ত্র সংস্কৃতি থেকে নিম্নোক্ত মন্ত্র গুলো সংগৃহীত।

সরিষা পড়া মন্ত্র


কাঁচা হলদি কাটিয়া সরিষার সহিত মিশাইয়া লইবে ও মন্ত্রে অভিমন্ত্র করিয়া লইবে। ছিটাইলে ও শিশুর বিছানা বালিশের তলে রাখিলে দোষ কাটিয়া যায়।

মন্ত্র: নরশিং নরশিং কোন কোন নরশিং
কোন কোন জাতি হইল উৎপত্তি। 
হুরুয়া জন্ম কথা কে দিল আনিয়া 
গাছ হৈলে তেন তেনিয়া, 
নগুলা পাতা নগুলা গোটা তারা কাঁপে, 
বসুমতী কাঁপে, পাতালে বাসুকী কাঁপে, 
বীর হনুমান কাঁপে থরথর, 
চারিকোনা পৃথিবী কাঁপে থর থর, 
এই জ্ঞান নরে যদি 
ঈশ্বর মহাদেবের জটা ছিঁড়ে ভূমে পড়ে 
ফলনা পঞ্চপ্রাণ রক্ষা কর, ওঁ স্বাহা।।

শিশু কাঁদায় কালিপড়া 


শিশু সন্ধ্যার সময় কাঁদে, থামে না, সাড়া রাত্রি কাঁদে, তখন রান্না পাত্রের নীচের কালি ঝাড়িয়া ৩ ফোঁটা শরিষা তেল মাখিয়া নিম্নমন্ত্রে অভিমন্ত্র করিয়া ডান হাতের কাঁর জোড়াতে, কনুই জোড়াতে কব্জি জোড়াতে তিন ফোঁটা, সেই রূপ বামহাতে তিন ফোঁটা এবং দক্ষিণ পায়ে জোড়া জোড়াতে তিন ফোঁটা, বাম পায়ে জোড়া জোড়াতে তিন ফোঁটা, কপালে এক ফোঁটা সর্ব মোট তের ফোঁটা কালির তিলক দিলে, মা কালীর আশীর্বাদে কাঁদা থামিবে। মন্ত্র গোপনে রাখা বাঞ্ছনীয়।

মন্ত্র: কালী কালী ভজিব কালী 
কালী পড়া সুরমা সুর 
কালী পড়া শিজি মাংজি 
কৈলাম দূর।

লাখা মন্ত্র


কাল সুতা সাতগাছি লইয়া পাকাইয়া সাত গিরাতে সাতবার মন্ত্র পড়িয়া শিশুর গলায় পৈতার মত জুড়িয়া দিবেন। বাম কাঁধে উপরে ডান বগলের নীচে যেন থাকে। 

মন্ত্র: ওঁ ঠাট্টা বজ্র নরশিং বন্দন বন্দন ওঁ স্বাহা।

শিশুর উদরাময়


শিশুর সাত আটমাস বয়সে দাঁত উঠার সময় হলদে বা সবুজ মল নিঃসরণ করে বারে বারে কয়েকদিন ব্যাপী পেটের অসুখে ভোগে। দীর্ঘদিনে ভাল না হইলে চক্ষু অন্ধ হয়। অনেক সময় শিশু মারা যায়। "ঝুনা নারিকেল বাঁটিয়া রস খাওয়াইবেন, ইহাতে আশ্চর্য্য ফল পাইবেন।
Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url