জন্ম নক্ষত্র অনুযায়ী ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য


কোন শিশু জন্মের সময় পুব আকাশে যে নক্ষত্র বিদ্যমান থাকে। সেটি ওই শিশুর জন্ম নক্ষত্র। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে সাতাশটি নক্ষত্র রয়েছে। আর এই নক্ষত্রগুলো আমাদের মানব জাতিকে প্রভাবিত করে আসছে। যার ফলে, জন্ম নক্ষত্র ব্যক্তির বৈশিষ্ট্যকে প্রভাবিত করে। নিচে, জন্ম নক্ষত্র অনুযায়ী ব্যক্তিদের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য কেমন হয় তা তুলে ধরা হলো।

জন্ম নক্ষত্র অনুযায়ী ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য সমূহঃ

১। অশ্বিনী
অশ্বিনী নক্ষত্রের অধিপতি কেতু। এই নক্ষত্রে জন্ম জাতক হয় বুদ্ধিমান, মেধাবী, তীক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পন্ন এবং নিজের চেষ্টায় জীবনে উন্নতি করে। প্রথম জীবনে বিদ্যা লাভ হয়। মধ্যবর্তী জীবনে কিছু কষ্টে ও ব্যয়ের মধ্যে দিয়ে ভাল বসতি করে। কর্ম ক্ষেত্র শুভ হয়। অনেকে তাকে মান্যকরে নেতৃত্ব করতে পারে। আত্মীয় স্বজনদের জন্য চিন্তা থাকে। সন্তান প্রায়ই প্রতিষ্ঠিত হয়। দাম্পত্য জীবন মধ্যম। জীবনে মাঝে মধ্যে হঠাৎ উন্নতি আসে। মাঝ বয়েসে বা শেষ বয়েসে কয়েক বছর ব্যয়বাহূল্যে কিছুটা কষ্টপেতেও পারে।

২। ভরণী
ভরনী নক্ষত্রের অধিপতি শুক্র। ইহাদের জীবনে শুভাশুভ মিশ্র ভাব এ কাটে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা পরিশ্রমী কম হয়, তবে মেধা খাটিয়ে কর্ম পরিচালনা দ্বারা জীবনে উন্নতি করিতে পারে। জীবনে সুযোগ মন্দ পায়না। জীবনের প্রথম দিকে অশুভ ভাবে কাটে। মধ্য বয়েস থেকে শুভ ভাব চলে। তখন অর্থ সঞ্চয় করলে শেষ জীবন সুখে কাটে। অর্থ বেশী অপচয় করলে বেশী বয়েসে আর্থিক দূশ্চিন্তায় ভোগে। দাম্পত্য জীবন বেশী সুখের নয়।

৩। কৃত্তিকা
কৃত্তিকা নক্ষত্রের অধিপতি রবি। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা যথেষ্ঠ পরিশ্রমী হয়। স্পষ্ট সত্যকথা বলতে ভালো বাসে। ইহাদের জীবনে মাঝে মধ্যেই বাধাবিঘ্ন আসে। অনেকেই ইহাদের ভুল বোঝে। জীবনে অনেক বাধা বিঘ্ন আসলেও শ্রম দ্বারা এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা উন্নতি করতে সফল হয়। মাঝে মধ্যে পাড়া প্রতিবেশী বা আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে বিবাদ হতে পারে অন্যের প্রতি ভাল কাজ করলেও যশ বা প্রতিদান কম পায়। দাম্পত্য জীবন মোটামুটি শুভ।

৪। রোহিনী
রোহিনী নক্ষত্রের অধিপতি চন্দ্র। চন্দ্রের প্রকৃতি কিছুটা ইহাদের মধ্যে থাকে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা শান্তিপ্রিয় এবং সবকিছু সমস্যার সমাধান ধীরে ধীরে করতে চায়। লোকের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়। অনেক সময় এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি প্রিয় হয়। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা সরল লোক ভালবাসে। নানা কাজে পার্গত হয়।

৫। মৃগশিরা
মৃগশিরা নক্ষত্রর অধিপতি মঙ্গল। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা ধীর স্থির কিন্তু কোন অন্যায় দেখলে ইহাদের মাথা গরম হতে পারে। ইহাদের মধ্যে মাঝে মাঝে একটু দ্বিমনা ভাব দেখা যায়। অনেকে ইহাদের শ্রদ্ধা করে। এবং এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা মিশুকে হয়। ইহাদের জীবনে মাঝে মধ্যে কর্মোন্নতির শুভ যোগ আসে। কিন্তু আত্মীয় ও পরিবেশ থেকে মনে আঘাত পায়।

৬। আদ্রা
আদ্রা নক্ষত্রের অধিপতি রাহু। ইহাদের নিজ শ্রমদ্বারা উন্নতি করার চেষ্টা থাকে। তবে কাজে সফল হয়না। আকস্মিক প্রাপ্তিযোগথাকে। মানসিক চাঞ্চল্য ও দূশ্চিন্তার ভাব থাকে। দাম্পত্য জীবন শুভনয়। মাঝে মধ্যে নানা রোগ ভয়।

৭। পুনর্বসু
পুনর্নবসু নক্ষত্রর অধিপতি বৃহস্পতি। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা মেধাবী হয় ও জীবনে উন্নতি করিতে পারে। প্রচুর সন্মান ও অর্থ লাভ করে থাকে। প্রায়ই মানসিক শান্তি ও আনন্দে থাকে। ভাই বোনদের জন্য কিছু চিন্তা হতে পারে। অনেকের বন্ধুত্ব ও সাহায্য লাভ করে। ব্যবসা ও চাকরি দুটোই শুভ।

৮। পুষ্যা
পুষ্যা নক্ষত্রর অধিপতি শনি। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা খুব ধার্মিক হয়। সংসারে আসক্তি কম থাকে। আধ্যাত্মিকভাব প্রবল হয়। মনুষ্যের মঙ্গল করতে ভালো বাসে। ইহাদের মধ্যে যোগ জ্যোতিষ আধিভৌতিক প্রভৃতির দিকে আকর্ষণ থাকে। ভাগ্য শুভ, কর্মলাভ অর্থলাভ ও নানা দিকে উন্নতি হয়। গুরুজন ব্যক্তিদের জন্যে চিন্তা থাকে।

৯। অশ্লেষা
অশ্লেষা নক্ষত্রর অধিপতি বুধ। ইহাদের জীবনে সব সময় দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভাব থাকে ও দ্বিমনা ভাবের থাকে। অনেক কাজ শুরু করে শেষ করতে পারেনা। সে জন্য জীবনে অতৃপ্তি আসে। তবে শ্রম করলে উন্নতি হবেই। দাম্পত্য জীবন শুভ হয়। মাঝে মধ্যে বাধা বিপত্তি ও চিন্তা হতাশায় জীবন উত্থান, পতন, হতেই থাকবে।

১০। মঘা
মঘা নক্ষত্রর অধিপতি কেতু। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা খুব তেজী হয় এবং আত্ম অভিমান প্রবল হয়। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা স্পষ্ট কথা বলতে ভালবাসে। সে জন্য অনেকের অপ্রিয় হয়। ইহাদের মেধাশক্তি খুব উচ্চ নাও হতে পারে। মধ্যম ভাবে জীবন কাটে। নানা বাধার মধ্যদিয়ে উন্নতি হয়। কিন্তু সময়ে হতাশা দেখাদেবে। মনে আবেগ প্রবনতা থাকে।

১১। পুর্বফল্গুনী
পুর্ব্বফাল্গুনী নক্ষত্রর অধিপতি শুক্র এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা মিষ্টিভাষী ও ধীর স্থির এবং একটুগম্ভীর প্রকৃতির হয়। যা করবে মন স্থির করে নেয় সময় বিশেষ কখন প্রকাশ করেনা। অন্যের সমালোচনা করে নির্ভীক ভাবে। ভয় কম থাকে। মাঝেসময়ে কিছু স্বার্থ ভাবদেখা যায়। নারীর প্রতি আকর্ষণ থাকে। ইহাদের জীবনে শুভযোগ অর্থ, আনন্দলাভ,ও সাংসারিক দিকে উন্নতি হয়।

১২। উত্তরফল্গুনী
উত্তরফাল্গুনী নক্ষত্রর অধিপতি রবি। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা খুব ভক্তিমান হয়। এবং ঈশ্বরের কৃপালাভ করে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা স্ত্রীর বশীভূত হতে পারে। সত্য ও সৎ পথে থেকেই এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা উন্নতিসাধন করে। জাতক সুহৃদয়শীল হয় অনেককে সাহার্য্যও করতে ভাল বাসে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা সৎবুদ্ধিযুক্ত এবং সদ্ভাবনার হয়।

১৩। হস্তা
হস্তা নক্ষত্রর অধিপতি চন্দ্র, এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা চোখের রোগ, বাত, পিত্তরোগ, সর্দিকাশি, প্রভৃতিতে কষ্ট পেতে পারে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা জ্ঞানী, বিচক্ষণ, বুদ্ধীমান, চতুর ও মেধাবী হয়। জাতক দীর্ঘায়ূহয়। পারিপার্শিক বাধা না এলে এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা বিরাট শিক্ষিত হয়। নিজ বুদ্ধির দ্বারা প্রচুরঅর্থ উপার্জন করে।

১৪। চিত্রা
চিত্রা নক্ষত্রর অধিপতি মঙ্গল। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা সত্যবাদী, বিচক্ষণ ও অল্পাহারী হয়। ছোটখাট রোগ ব্যধি অনেক হয়। অর্থ উপার্জন করে মধ্যম। বহূ কুটুম্ব থাকে। ক্ষমতাশালী হলেও একটু অলস হয়। স্থূলকপাল লোম যুক্তদেহ। দাতের রোগের ভয়। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা মাঝে মধ্যে জণসাধারনের প্রিয় হয়। কখন আবার অপ্রিয় হয়। উত্থান পতনের মধ্যদিয়ে জীবন। তবে ইহাদের তেজ ও সাহস থাকে মনের জোর প্রচুর।

১৫। স্বাতী
স্বাতী নক্ষত্রর অধিপতি রাহু। ইহাদের মধ্যে শান্তভাব থাকবে। তবে কখন বা হঠাৎ করে রেগে ওঠে। ইহাদের কপালস্থূল, দ্বাতা, সুবুদ্ধিমান, সৎপরামর্শ দাতা, বিদ্বানহয়। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরাধনবান হলেও মনে বৈরাগ্য ভাব থাকে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা হয় শুরেশ, দেবদ্বিজে ভক্তিপরায়ণ। সন্তানদের জন্য বিশেষ চিন্তাথাকে।

১৬। বিশাখা
বিশাখা নক্ষত্রের অধিপতি বৃহস্পতি। ইহাদের মাথাভার, মাথাব্যথা, পিত্তরোগ হতে পারে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা হয় দেবভক্ত, সত্যবাদী, এবং জিতেন্দ্রিয়। ধার্মিক ভাব থাকে প্রায়ই জ্ঞাণী হয়। অজীর্ণরোগ হয়। মোটামুটি সন্দেহ যুক্ত, কামী হয়। তবে এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা নিজ চেষ্টাদ্বারা ধনী হয়। ইহাদের হৃদয়ে সদ্ভাবনা প্রচুর থাকে। কারো সঙ্গে ঝমেলা পছন্দ করে না। তবে রেগে গলে মাথা খুব গরম হয়।

১৭। অনুরাধা
অনুরাধা নক্ষত্রর অধিপতি শনিদেব। ইহাদের দেহ শ্যামবর্ণ হয়, এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা খুবগভীর ও দয়ালু প্রকৃতির হয়। ধর্মে মতি থাকে। চেষ্টাকরলে যথেষ্ঠ জ্ঞাণলাভ করতে পারে। ইহাদের পেটের বা লিভারের রোগ হয়। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা সুদেহী, কামভাব বেশি। শ্রমদ্বারা ভাল অর্থ উপার্জন করতে পারে। মনন শীলতা থাকে, তবে অব্যয় খরচ দেখলে মাথাগরম হয়।

১৮। জেষ্ঠা
জেষ্ঠা নক্ষত্রর অধিপতি বুধ, এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা খুব দয়ালু হৃদয়বান থাকে।‌ চেষ্টাকরলে এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারে। বাতরোগ পিত্তরোগ মাথার রোগ হতে পারে। ইহাদের মধ্যে অল্প বয়েসে বেশী বুদ্ধির বিকাশ হয় এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা খুব বাস্তববাদী ও শ্রমশীল। তবে প্রচুর আয় করে গরীব দঃখীদের সাহার্য্য করে থাকে।

১৯। মূলা
মূলা নক্ষত্রর অধিপতি কেতু। ইহাদের কপাল হয় গজের মতো। শীতলদেহ বিপরীত লিঙ্গের বশীভূত হয়। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা গান বাজনা ভাল শিখতে পারে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা খুব আড়াম্বরপ্রিয় হয়। ইহাদের বহূ আত্মীয় কুটুম্ব থাকে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা প্রায়ই একটু কৃপণ হয়। সন্তানের জন্য বিশেষ চিন্তা থাকে। দাম্পত্য জীবন মধ্যম, এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা নিজ মনের কথা প্রায় লুকিয়ে রাখে।

২০। পূর্বাষাঢ়া
পূর্ব্বাষাঢ়া নক্ষত্রর অধিপতি শুক্র, ইহাদের কপালস্থূল মতো। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা লেখাপড়া ভাল শিখতে পারে। একটু আড়ম্বর প্রিয়, চোখ একটু রক্তাভ। ইহাদের বহূত আত্মীয় কুটুম্ব থাকে। একটু খরচী হয়। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা গৌরবর্ণর শুচি বদন, জাতক দীর্ঘায়ূ এবং বাবা মার প্রিয় হয়। বহূ লোকের ও আপন আত্মীয়র আশ্রয়দাতা হয়। তবে প্রশংসা কম পায়।

২১। উত্তরষাঢ়া
উত্তরষাঢ়া নক্ষত্রর অধিপতি রবি। ইহাদের দেহ একটু স্থূল মতো মনে গর্বিত ভাব থাকে। জাতকের যশ লাভহয়। গান বাজনা ও শিল্পে পার্গত হয়। ইহাদের অজীর্ণ উদারময় বাতরোগ লিভার রোগঅম্লরোগ দেখা দেয়। পিঠ একটু কুঁজো ভাব, এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা অনেকের শ্রদ্ধালাভকরে এবং সন্মানিত হয়। ইহাদের কাছেথেকে সবাই সমান সাহায্য পায়না।

২২। শ্রবনা
শ্রবনা নক্ষত্রের অধিপতি চন্দ্র। ইহাদের দেহ একটু কঠিন হয়। চাপা গজ কপাল, শ্যামবর্ণ হয়। ইহাদের বাতরোগ, লিভাররোগ, অম্ল, অজীর্ণ, রোগ হয়। চোখ একটু রক্তাভ হয়। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা বেশ সু—রসিকহয়। পরিশ্রমী ও বুদ্ধিমান শ্রমদ্বারা জীবনে উন্নতি করে। খরচা বেশী করতে চায় না।

২৩। ধনিষ্ঠা
ধনিষ্ঠা নক্ষত্রর অধিপতি মঙ্গল। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা গৌরবর্ণ ধার্মিক ও দেবভক্ত হয়। পেটেররোজ ও অজীর্ণ রোগ হয়। উপার্জন মধ্যমহয়। মন খুব চঞ্চল, খেতে ভাল বাসে। মাঝে সময়ে ভ্রমনে খুশী হয়। অনেক সময় ধনী ও দাতাহয়। মাঝ বয়েস থেকে সুখী হয় প্রথম জীবনে সংগ্রাম।

২৪। শতভিষা
শতভিষা নক্ষত্রর অধিপতি রাহু। ইহাদের মন বেশ পবিত্র এবং সত্যনিষ্ঠ হয়। জীবনে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারে। শ্যামবর্ণ হয়। ইহাদের আমবাত এলার্জি স্নায়বিক ও চোখেররোগ হয়। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা বিবেকি এবং বৈরাগ্য ভাবের হয়। শেষ জীবনে সন্ন্যাস ধর্ম লাভ করিতে পারে। ব্যবহার মধুর তবে স্বভাব চাপা।

২৫। পূর্ব ভাদ্রপদ
পূর্ব ভাদ্রপদ নক্ষত্র অধিপতি বৃহস্পতি। ইহাদের কপাল প্রশস্ত নাসা উন্নত হয়। দেহ তাম্রবর্ণ। বিপরীত লিঙ্গের বশীভূত হয়। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা পরোপকারী এবং দয়ালু প্রকৃতির হয়। রূপ সুন্দর হয়, রাজভক্ত রাজসেবক হতে পারে। জীবনে প্রচুর অর্থ উপার্জন যেমন করে তেমন খরচও অত্যাধিক করে। গৃহ নির্মাণ যোগ আছে। জাতক বিদ্বানও হয়।

২৬। উত্তর ভাদ্রপদ
উত্তর ভাদ্রপদ নক্ষত্র অধিপতি শনিদেব। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা গৌরবর্ণ ও রূপবান হয়। গম্ভীর ভাব থাকে,সরকারী কাজ করলে প্রচুর উন্নতি করে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা নির্জনতা পছন্দ করে যাদুবিদ্যা, জ্যোতিষ, গভীর জ্ঞাণের পুস্তকপাঠ প্রভৃতি ভাল বাসে। হালকা ভাব সদায় পছন্দ করে। ইহাদের মন বাইরে বোঝা কঠিন।

২৭। রেবতী
রেবতী নক্ষত্র অধিপতি বুধ। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা সুন্দর চেহেরা বিশিষ্ট, এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা সুন্দর চেহেরা বিশিষ্ট, গৌর বর্ণ জ্ঞাণী মানী এবং বিরাট যশস্বী হতে পারে। ইহাদের কেশ দীর্ঘ ও কাম ভাব বেশী থাকে এবং একাধিক নারীতে আকৃষ্ট হতে পারে। এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা বাইরে হালকা স্বভাব কিন্তু ভিতরে ভীষণ চতুর। মাঝে মধ্যে দ্বিমনা ভাব দেখা যায়। অনেক সময় খেয়ালের বশে অনেক কাজ করে । বৃদ্ধি ও শিল্পী কাজে এই নক্ষত্রের ব্যক্তিরা প্রচুর উপার্জন করে।

নক্ষত্র অনুসারে নির্দিষ্ট রোগ সমূহঃ
  1. অশ্বিনী নক্ষত্র: বাতব্যথা, অনিদ্রা, মতিভ্রম, শিরঃপীড়া।
  2. ভরণী নক্ষত্র: স্নায়ুবিক দুর্বলতা, অলসতা এবং প্রবল জ্বর।
  3. কৃত্তিকা নক্ষত্র: কলিক ব্যথা, প্রদাহ, অনিদ্রা।
  4. রোহিণী নক্ষত্র: জ্বর, মাথার যন্ত্রণা, মাথাধরা, প্রলাপ এবং কুক্ষিগত উদর ব্যথা।
  5. মৃগশিরা নক্ষত্র: বাতব্যধি, চর্মরোগ।
  6. আদ্রা নক্ষত্র: বাত-ব্যথা, জ্বর, অনিদ্রা এবং শ্লেষ্মাঘটিত পীড়া।
  7. পুনর্বসু নক্ষত্র: জ্বর, শিরোরোগ, কোমরের ব্যথা।
  8. পুষ্যা নক্ষত্র: জ্বর, শরীর ব্যথা এবং পিত্ত প্রদাহ।
  9. অশ্লেষা নক্ষত্র: পায়ের ব্যথা, সমস্থ শরীরে কষ্টদায়ক অস্থিরতা।
  10. মঘা নক্ষত্র: বাত ব্যথা, শিররোগ।
  11. পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র: জ্বর, শিরোপীড়া, সমস্থ শরীরে কষ্টদায়ক অস্থিরতা।
  12. উত্তরফাল্গুনী নক্ষত্র: জ্বর, বাত ব্যথা।
  13. হস্তা নক্ষত্র: উদর ব্যথা, কোষ্ঠবদ্ধতা।
  14. চিত্রা নক্ষত্র: কষ্টদায়ক অস্থিরতা।
  15. স্বাতী নক্ষত্র: কষ্টদায়ক জ্বর, অস্থিরতা।
  16. বিশাখা নক্ষত্র: উদরব্যথা, সমস্থ শরীরে তাপ বৃদ্ধি।
  17. অনুরাধা নক্ষত্র: তীব্র জ্বর,শিরোরোগ, সমস্থ শরীরে অস্থিরতা।
  18. জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র: শরীর কম্পন, পিত্তরোগ।
  19. মূলা নক্ষত্র: উদররোগ, মুখের রোগ।
  20. পূর্বাষাঢ়া নক্ষত্র: কাপুনি জ্বর, সমস্থ শরীরে প্রদাহ,শিরোরোগ।
  21. উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্র: কোমরে বাত, শূলব্যথা, বিকার জ্বর।
  22. শ্রবণা নক্ষত্র: মুত্রকৃচ্ছ, জ্বর, অতিসার।
  23. ধনিষ্ঠা নক্ষত্র: আমাশয়, কাপুনি জ্বর।
  24. শতভিষা নক্ষত্র: জ্বর, বাত, সন্নিপাত।
  25. পূর্বভাদ্রপদ নক্ষত্র: বমন, শিরোপীড়া, অস্থিরতা।
  26. উত্তরভাদ্রপদ নক্ষত্র: বাতব্যথা, দন্তশূল।
  27. রেবতী নক্ষত্র: পিত্তঘটিত রোগ, জ্বর, বাত।

নক্ষত্র প্রভাবিত রোগ সমূহ অধিকাংশই অল্পস্থায়ী রোগ। মানুষের শরীরে দ্বাদশ রাশি ও গ্রহ প্রভাবিত যে সকল বিশেষ কষ্টদায়়়ক ও মারাত্মক রোগ হয়, এগুলো তার সহকারি রোগ মাত্র। যেমন জ্বর, শিরোরোগ, ব্যথাব্যথা ভাব, সমস্থ শরীরে কষ্ট ও অস্থিরতা এগুলো প্রায় বড়় রকম রোগের উপসর্গ কেবল মাত্র। অতএব, এগুলো রাশি ও গ্রহ নির্দিষ্ট রোগকেই প্রভাবিত করে।
Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url