মানসিক চাপ কমাতে সময় পেলেই আড্ডা দিন

আজকাল চতুর্দিকে স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট ক্লিনিকের কথা খুব শােনা যাচ্ছে। এসব করে সত্যিই কি মানসিক চাপ কমে? মানসিক চাপ দুটো জিনিসের ওপর নির্ভর করে— (১) পারিপার্শ্বিক চাপ (২) আপনার সহ্য ক্ষমতা। এ দুটোর কোনও একটা বাড়লে কমলে মানসিক চাপ বাড়ে কমে। প্রতিকূল পারিপার্শ্বিককে অনেক সময় চেষ্টা করেও ঠিক করতে পারা যায় না। সেক্ষেত্রে জোর দিতে হয় ব্যক্তিবিশেষের সহ্য ক্ষমতার ওপর। গাড়িতে দেখবেন শক অ্যাবসরভার লাগানাে থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত শক অ্যাবসরভার ' ঠিক আছে চোট কিন্তু গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছয় না। আমাদের সহ্য ক্ষমতা সেরকম শক অ্যাবসরভার। যত তাকে জোরদার করে তুলতে পারবেন, তত ভালভাবে সে পারিপার্শ্বিক চাপ সামলাবে। এই শক অ্যাবসরভার একেক জন মানুষের ক্ষেত্রে একেকরকম। তাই দেখবেন একই পরিস্থিতিতে দু'জন মানুষ দু'ভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট ক্লিনিকে শেখানাে হয় কীভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চললে মনের উপর সব থেকে কম চাপ আসবে। যিনি যত খােলা মনে এই জায়গায় থাকেন, তত ভাল ফল পাবেন। এই বিষয়ে আরো জানাচ্ছেন: ডাঃ অমিতাভ মুখােপাধ্যায়

❍ প্রশ্ন: অনেক জায়গায় গিয়েও অনেকে চাপমুক্ত হতে পারেন না। সেটা কি তাঁরা খােলা মনে যান না বলে হয়না?

☛ উত্তর: তা নয়, মানসিক চাপ খুব বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে টানাপােড়েন বাড়ে। অবসাদও দেখা দেয় অনেক সময়। অবসাদ যদি রােগ হিসেবে এসে উপস্থিত হয় এবং মানুষটির প্রাত্যহিক কাজকর্মও এর জন্য ব্যাহত হতে থাকে, কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ পত্রের চিকিৎসা প্রয়ােজন হয়। অবস্থা কিছুটা আয়ত্তে এলে তারপর স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের অন্যান্য পদ্ধতিগুলির মধ্যে যাওয়া হয়।

❍ প্রশ্ন: স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের অন্যান্য পদ্ধতি বলতে?

☛ উত্তর: খুব বেশি মানসিক চাপ এবং তার ফলে কিছু শারীরিক, মানসিক সমস্যা যেমন ঘুম না হওয়া বা বেশি ঘুম হওয়া, ক্ষিধে না হওয়া বা বেশি খেতে থাকা, মনঃসংযােগের অভাব, কাজে অনীহা, ক্লান্তি, হতাশা ইত্যাদি নিয়ে যাঁরা আসেন তাঁদের চিকিৎসা শুরু হয় অ্যান্টি ডিপ্রেসেন্ট ড্রাগ, মুড এলিভেটর, অ্যান্টি অ্যাংজাইটি ড্রাগ বা ঘুমের ওষুধের সাহায্যে। এরপর পনেরাে দিন কি একমাসের মাথায় বায়াে-ফিডব্যাক মেশিনের সাহায্যে তাঁর মানসিক চাপের পরিমাণ বুঝে নেওয়া হয়। অনেক সময় অবশ্য ওষুধ শুরু করার আগেও এটা করা হয়। এবার দরকার মতাে সাইকোথেরাপি বা কাউন্সেলিং সঙ্গে রিলাক্সেশন এক্সারসাইজ, খাওয়া দাওয়ার নিয়ম কানুন, ম্যাসাজ, যােগাসন, ধ্যান, কিছু সুগন্ধীর ব্যবহার মানুষটিকে সুস্থ করে তােলে।

❍ প্রশ্ন: মানসিক চাপ কমাতে খাবারেরও ভূমিকা আছে?

☛ উত্তর: সবুজ শাক সজি, টাটকা ফলে প্রচুর ভিটামিন এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এরা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। অশান্তি, টানাপােড়েন বেশি চললে প্রচুর জল খাওয়া উচিত। আর খাবার হওয়া উচিত হাস্কা, সহজ পাচ্য এবং ফাইবার যুক্ত। কারণ এ সময় হজমের গণ্ডগােল, অম্বল, কোষ্ঠবদ্ধতা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি থাকতে পারে। চা, কফি, অ্যালকোহল জাতীয় উত্তেজক পানীয় না খাওয়াই ভাল। অনেকে অশান্তি উদ্বেগ ভুলে থাকতে সিগারেট, অ্যালকোহলকে সাথী করেন। এর থেকে জন্মায় নির্ভরতা। যার ফল খুবই খারাপ।

❍ প্রশ্ন: মানসিক চাপ কমাতে কী ধরনের ব্যায়াম করতে হবে?

☛ উত্তর: সবথেকে ভাল ভােরবেলা খােলা হাওয়ায় হাঁটা বা জগিং করা। একটানা হাঁটতে হবে। ৪৫ মিনিটে অন্তত ২-২.৫ কিলােমিটার। অনেকে একা হাঁটা পছন্দ করেন না। সঙ্গী জোগাড় না হলে হেলথ ক্লাবে ভর্তি হতে পারেন। ৩০-৪৫ মিনিট নানারকম মেশিন এবং কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করলে সুফল পাবেন। এক্সারসাইজ মাত্রা বজায় রাখা খুব জরুরি। পরিমিত এক্সারসাইজ করলে শরীর থেকে এন্ডােরফিন বার হয়। স্ট্রেস কমাতে যার ভূমিকা অপরিসীম। এক্সারসাইজ বেশি হয়ে গেলে বেরােয় ল্যাকটিক অ্যাসিড। এর প্রভাবে স্ট্রেসের মাত্রা বেড়ে যায়।

❍ প্রশ্ন: ধ্যান করলেও তাে মানসিক চাপ কমে। কিন্তু খুব অশান্তির মধ্যে যিনি আছেন তাঁর পক্ষে অতখানি মনঃসংযােগ করা সম্ভব?

☛ উত্তর: ধ্যানের অত কঠিন পর্যায়ের মধ্যে যাবেন না। সারাদিনে যখনই সময় পাবেন, ঘুম আসার আগে বিছানায় শুয়ে, গাড়িতে বসে এমনকি অন্য কোনও কাজ করতে করতেও আপনার কোনও পছন্দের জিনিস নিয়ে একাগ্র মনে ভাবার চেষ্টা করুন। আসল কথা হল খানিকক্ষণের জন্যে হলেও মনকে অশাস্তির বিষয় থেকে সরিয়ে অন্য বিষয়ে ফেলা। এতে শরীরে ক্ষতিকর রাসায়নিক ক্ষরণের পরিমাণ কমে এবং অশান্তি উদ্বেগের ফলে যে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা তার পরিমাণ কম হয়।

❍ প্রশ্ন: দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি বলতে?

☛ উত্তর: পেটের গন্ডগােল থেকে আলসার, ঘুম না হওয়া, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরােগ এমন কি ক্যালারও। আসলে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ শরীরের রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে ছােট থেকে বড়সর অজস্র রােগ থাবা বসায় শরীরে। সেখান থেকে বদমেজাজ, কাজে ক্ষতি, সম্পর্ক নষ্ট। তার ফলে আরও মানসিক চাপ। অর্থাৎ কেটে বেরিয়ে না এলে এই আবর্ত থেকে আর মুক্তি নেই।

❍ প্রশ্ন: কীভাবে কেটে বেরব?

☛ উত্তর: অনেক রাস্তা আছে। প্রথমে কয়েকটা জিনিস বােঝবার চেষ্টা করুন—
(১) মানসিক চাপের ভাল মন্দ দুদিকই আছে। চাপের মুখে কাজ করা, পরীক্ষার পড়া তৈরি করা-এগুলাে ভাল দিক। আবার এই চাপই যখন গ্রাস করে তখন সে ক্ষতিকর। মাত্রা ঠিক রাখতে পারবেন কিনা তার ওপর সব নির্ভর করছে।
(২) দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ কিন্তু শরীর এবং মনের জন্য ক্ষতিকর। অর্থাৎ মানসিক চাপ কে নিজেব ওপর চেপে বসতে দেবেন না।
(৩) কী পরিস্থিতিতে আপনার ওপর চাপ সৃষ্টি হয় তা নিজে নিজে বােঝার চেষ্টা করবে।
(৪) বিশ্বাস রাখুন, আপনি নিজেই আপনার ভার লাঘব করতে পারবেন। এবার আসুন, চাপকে কিছুটা এড়িয়ে কিছুটা সঙ্গে নিয়ে কীভাবে বাঁচা যায় সেই পথ খুঁজি।
(১) কোনও একটা নির্দিষ্ট মুহূর্তে যেমন স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে বা অফিসে বসের সঙ্গে কথা বলছে, খেয়াল রাখুন কথাবার্ত কোন্ রাস্তায় গেলে অশান্তির সূত্রপাত হতে পারে।
(২) রাস্তাটা যদি চিনে থাকেন, ভুলেও সে পথে হাঁটবেন না। হয়ত এর জন্য আপনাকে নত হতে হতে পারে।
(৩) অশান্তির রাস্তাটা হয়তাে এড়ালেন কিন্তু নত হতে হয়েছে বলে খারাপ লাগতে লাগল। বা হয়তাে চেষ্টা করেও অশান্তি এড়াতে পারেননি, সুইচ অফ-সুইচ অন পদ্ধতি শিখে নিন। যে ব্যাপারটা কষ্ট দিচ্ছে, খানিকক্ষণের জন্য সেই ব্যাপারটা মন থেকে বার করে দিন। সম্পূর্ণ উল্টো কোনও বিষয় নিয়ে ভাবতে থাকুন। অর্থাৎ মনের সুইচ অফ হয়ে গেছে। যে কোনও পরিস্থিতিরই খারাপ প্রভাব সময়ের সঙ্গে কেটে যায়। কেটে যাওয়ার পর আবার সুইচ অন করুন। জীবনের সব ক্ষেত্রেই কিন্তু এই পদ্ধতি কাজে লাগাতে হবে।
(৪) মনে মনে গজরানাের স্বভাব বদলে ফেলুন। যদি কিছু করার থাকে করুন। না হলে অযথা বিষয়টাকে মনের মধ্যে তােলপাড় করে অশান্তি বাড়াবেন না।
(৫) কাজ-অবসর এবং হবি-তিনটেই যেন থাকে আপনার জীবনে। কাজের জায়গা যেমন তেমন হােক, অবসর কিন্তু সুন্দর করে তুলতে হবে। অবসর সময় ক্রিয়েটিভ কিছু করা যেমন গান গাওয়া, ছবি আঁকা, লেখা আপনার মনকে বাস্তব থেকে অন্যজগতে নিয়ে যাবে। গানবাজনা বা লেখালেখির অভ্যেস না থাকলে বই পড়ুন, সিনেমা, থিয়েটার দেখুন। নয়তাে নিছক আড্ডা মারুন। মানসিক চাপ কমাতে আড্ডা খুব কার্যকর।
(৬) দিনের মধ্যে অন্তত একটা সময় শব্দ এবং আলাের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ সরিয়ে নিন নিজেকে। ঘরে ধূপ জ্বেলে দিন বা পছন্দের সুগন্ধী স্প্রে করুন। সুগন্ধ অন্ধকার এবং নৈশব্দ্যের মধ্যে আপনার প্রিয় জিনিস নিয়ে ভাবুন। একে যদি ধ্যান বলতে চান বলতে পারেন।
(৭) অশান্তির সময় চিৎকার চেঁচামেচির মধ্যে থাকলে আরও অশান্তি লাগে। নিজে আস্তে কথা বলুন। চেষ্টা করুন যাঁরা আপনার আশে পাশে রয়েছে তাঁরাও যেন আস্তে কথা বলেন।
(৮) এ সময় হাসি আসতে চায় না। কিন্তু হাসতে হবে। সবার সঙ্গে হাসি মুখে কথা বলুন। এর ভাল প্রভাব পড়বে আপনার ওপর।
(৯) নিজের শক্তি, দুর্বলতা এবং সীমাবদ্ধতা ভালভাবে বুঝে সেই ভাবে কাজ করুন।
(১০) ১০ দিন বাদে কী হবে সেটা না ভেবে শুধু আজকের দিনটা সব থেকে ভাল ভাবে কীভাবে কাটাতে পারেন তার ছক করুন। সারা দিনটা এমন ভাবে কাটাতে চেষ্টা করুন যাতে রাত্রে ঘুমােবার সময় কোনও গ্লানিকর অনুভূতি আপনাকে দুঃখ না দেয়।
(১১) সময়ের সঠিক ব্যবহার শিখুন। কোন সময় কী করলে সেটা ঠিক করে রাখুন।
(১২) যদি মনে করেন প্রয়ােজনের অতিরিক্ত চাপ এসে পড়েছে ভদ্রভাবে না ’ বলা অভ্যেস করুন। ‘ না ’ করতে পারাটা কিন্তু একটা আর্ট। এটা জানা না থাকায় অনেকেরই জীবন দুর্বিষহ হয়ে যায়।
(১৩) পৃথিবীর সব কিছু আপনার আয়ত্তে নেই, সবকিছু আপনার দ্বারা হবে না-এটা মেনে নিন, নচেৎ দুঃখ বাড়বে।
(১৪) পরিবর্তন দেখলেই ভয় পাবেন না। আপনি চান বা না চান পরিবর্তন আপনার জীবনে আসবে। তাকে যদি হাসিমুখে অভ্যর্থনা করতে পারেন আপনারই লাভ।
(১৫) গোঁয়ার্তুমি করবেন না। প্রতিটি বিষয়ের এপাশ ওপাশ ভাবুন। যে দিকে গেলে মানসিক চাপ কম হবে খােলা মনে সেদিকে যান। জীবনটা এত বড় এবং প্রতিটি ঘটনাই এত ক্ষণস্থায়ী যে হার জিতের সত্যিকার কোনও অর্থ নেই।

❍ প্রশ্ন: হার জিতকে গুরুত্ব না দিলে মানসিক চাপ কমে যাবে?

☛ উত্তর: হ্যা, এই জন্যই তাে বারবার মন ভােলা রাখার কথা বলছি। ভােলা মনে বিচার করতে পারলে দেখবেন আজ যেটা জিত মনে হচ্ছে হয়তাে তার পেছনে কোনও হার লুকিয়ে আছে। অথাৎ হারজিত সব কিছুরই বাস আমাদের ভাবনার মধ্যে। তেমনভাবে ভাবতে পারলে হারটাও জিতের চেহারা নিতে পারে। অথবা সবকিছুকে ছেড়ে দিয়ে যদি শান্তি অশান্তিকে গুরুত্ব দিই। যে কোনও পরিস্থিতিতেই শান্তি পাওয়া মানে যদি হয় জেতা আর অশান্তি পাওয়া মানে হেরে যাওয়া অর্থাৎ প্রায়ােরিটি বদলে দেওয়া, মানসিক চাপ কমবে।

❍ প্রশ্ন: সব মেনে চলার পরও যদি আচমকা অস্থিরতা দেখা দেয় কী করব?

☛ উত্তর: সব যদি মেনে চলেন অস্থিরতা সহজেই কেটে যাবে। যাইহােক, আচমকা অস্থিরতা দেখা দিলে কয়েকটি জিনিস পরপর করে যান
(১) আরাম করে বসুন বা শুয়ে পড়। যদি সেই পরিস্থিতি না থাকে, একটু একা হয়ে চোখ বন্ধ করে ১-২ করে ৩০০ পর্যন্ত গুনুন।
(২) বাথরুমে গিয়ে ঘাড়ে, চোখে, মুখে এবং পায়ের পাতা ভাল করে জল দিয়ে ভিজিয়ে নিন। জল না মুছে ফ্যানের নীচে দাঁড়ান। ঠাণ্ডর ধাত থাকলে ব্যাপারটা একটু বুঝেশুনে করবেন।
(৩) এক গ্লাস ঠাণ্ডা সরবত বা কোল্ডড্রিঙ্কস, না পেলে অন্তত এক গ্লাস ঠাণ্ডা জল খান
(৪) কাজ থেকে তাড়াতাড়ি ছুটি নিয়ে পায়ে হেঁটে অথবা গাড়িতে খানিকটা বেড়িয়ে আসুন। মনের সুইচ যেন এ সময় অফ করা থাকে।
(৫) গান শােনা, সিনেমা দেখা বা পছন্দের মানুষের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া যেতে পারে।
(৬) অন্যদিন যা খান তার থেকে কম পরিমাণ হাল্কা খাবার খান।
(৭) অ্যালপ্রাজোলাম, বুসপিরন বা হাইড্রক্সিজিন জাতীয় ওষুধ রাত্রের খাবার খাওয়ার ১৫ মিনিট আগে খেয়ে নিন। অশান্তি দূর হবে। ঘুম আসবে।
(৮) সকালে উঠেও যদি পুরনাে স্মৃতি ঝঞ্জাট বাধাতে থাকে সুইচটা আবার অফ করে দিন এবং অন্যদিনের থেকে একটু বেশি সময় ধরে যােগাসন এবং ধ্যান করুন। 

Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url