তন্ত্র শাস্ত্রের কয়েকটি বশীকরণ তন্ত্র-মন্ত্র ও প্রয়োগ পদ্ধতি

প্রিয় পাঠক, এই প্রবন্ধে আমরা বশীকরনের কয়েকটি তন্ত্র মন্ত্র নিয়ে আলোচনা করব। পুরনো একটি তান্ত্রিক পুস্তক থেকে এই পদ্ধতি গুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। সংস্কৃত শ্লোকের নিচে বাংলা অনুবাদে দেয়া হলো। যাতে আপনারা মূল শ্লোক এবং অনুবাদ পড়ে ভালোভাবে বুঝতে পারেন। ষটকর্মের নিয়ম এবং গুরুর অনুমতি ব্যতীত এই সকল তন্ত্র-মন্ত্রের কাজ নিষ্ফল।

১। রবিবারে গৃহীত্বা তু কৃষ্ণধুস্তুরপুষ্পকং।
শাখাং লতা গৃহীত্বা তু পত্রং মূলং তথৈব চ॥
পিষ্ট্বা কর্পূর সংযুক্ত কুঙ্কুমং রোচনং সমং।
তিলকে স্ত্রীবশীকুর্য্যাদ্ যদি সাক্ষাদরুন্ধতী॥

রবিবারে কৃষ্ণধুতুরার পুষ্প, শাখা, লতা, পত্র ও মুল গ্রহণ করিয়া পেষণ করিবে। পরে তাহার সহিত কর্পূর, কুঙ্কুম ও গোরোচনা সংযুক্ত করিয়া কপালে তিলক করিবে। ইহাতে স্ত্রী বশীভূতা হইবে। এই বশীকরণে স্বয়ং অরুন্ধতীও বশ্যা হইবেন।

২। ব্রহ্মদণ্ডী চিতাভষ্ম যস্যাঙ্গে নিক্ষেপেন্নর
বশীভবতি সা নারী নান্যথা শঙ্করোদিতং॥

ব্রহ্মাদণ্ডী (বামুনহাটি গাছ) ও চিতাভষ্ম যে নারীর অঙ্গে নিক্ষেপ করিবে, সেই নারী বশীভূত হইবে; এই কথা মহাদেব বলিয়াছেন।

৩। সিন্দুর কদলীকন্দং পেষয়েদ্ গুরুবাসরে।
অনেন তিলকং কৃত্বা সদ্যো নারী বশীভবেৎ॥

বৃহস্পতিবারে সিন্দুর ও কদলীমূল পেষণ পূর্ব্বক কপালে তিলক করিবে, এই তিলক দর্শন মাত্র নারী বশীভূত হইবে।

৪। গৃহীতা মালতীপুষ্পং পট্টসূত্রেন বর্ত্তিকা।
ভৃগুবারে নৃকপালে এরণ্ডতৈল কজ্জলং,
কজ্জলং চাঞ্জয়েন্নেত্রং দৃষ্টিমাত্রং বশীভবেৎ।
বিনামন্ত্রেণ সিদ্ধিঃ স্যান্নান্যথা শঙ্করোদিতম্ ॥

মালতী পুষ্প ও পট্টসুত্র দ্বারা বর্ত্তিকা প্রস্তুত করিয়া এরণ্ড তৈলে প্রদীপ জালিবে, এই প্রদীপের শিখায় শুক্রবারে মনুষ্যের মস্তকের অস্তিতে কজ্জল পাত করিবে, (নিম্নলিখিত মন্ত্রে) এই কজ্জল দ্বারা চক্ষু অঞ্জিত করিলে, তাহাকে যে নারী দর্শন করিবে, সেই নারী বশীভূতা হইবে।

মন্ত্রঃ “ওঁ নমঃ কামাখ্যাদেবী অমুকীং মে বশংকরী স্বাহা।” এতন্মন্ত্রমষ্টোত্তর শত জপেন সিন্ধিঃ।

অর্থাৎ, এই মন্ত্র অষ্টোত্তর শতবার জপ করিলে সিদ্ধি হইবে, তৎপরে কার্য্য করা কর্তব্য।

উপরোক্ত তন্ত্র মন্ত্র গুলো কার্যকরী এবং প্রমাণিত। আপনি যদি ভালো কাজে এগুলো ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই একজন গুরুর সহযোগিতা পাবেন। আর খারাপ কাজে ব্যবহার করলে হয়তো কেউ আপনাকে সহযোগিতা করবে না। আপনি যদি গুরু হিসেবে কাউকে খুঁজে না পান। তাহলে, একজন সাধুপুরুষ অথবা এমন কাউকে খুঁজুন যিনি একটু হলেও তন্ত্র মন্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন। অতঃপর উনাকে মনের কথা খুলে বলুন যে, আপনি তাকে গুরু মান্য করেন। সাথে এটাও বলুন, এই কাজে শিষ্য হিসেবে আপনি তার অনুমতি চান।

যেহেতু তন্ত্র শাস্ত্রে গুরুর অনুমতি ব্যতীত কর্ম নিষ্ফল। তাই আপনাকে অবশ্যই গুরুত্ব ধরতে হবে। তবে হ্যাঁ, তন্ত্রশাস্ত্র এটাও বলে— কেউ যদি ঐশ্বরিক ভাবে সিদ্ধিলাভ করেন তিনিও এই কাজে সফলতা লাভ করবেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন হচ্ছে; মানুষ ব্যতীত অন্য কাউকে কি গুরু মান্য করা যায়?

তন্ত্রশাস্ত্র গুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়; গণেশ, শিব কালীকে তন্ত্র শাস্ত্রে গুরু মানা হয়।

Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url