মনোবাসনাপূর্ণ ও কার্য সাধনে বিভিন্ন প্রকার কালী মন্ত্র
তন্ত্র-মন্ত্র সাধনায় বেশিরভাগ সাধকগণ দেবী কালীকে গুরু (সিদ্ধিদায়িনী মা) হিসেবে মান্য করে এবং ভক্তি সহকারে তার পূজা করেন। তান্ত্রিক পুস্তক গুলো অধ্যায়ন করলে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। মনোবাসনা পূরনে কঠিন এবং ভয়ঙ্কর তন্ত্র সাধনায় সিদ্ধি লাভের জন্য। প্রাচীন থেকে আজ অব্দি, দেবী কালীর মন্ত্র গুলোর প্রচলন এবং চর্চা হয়ে আসছে। সাধকদের মুখে প্রচুর চর্চার কারণে, দেবী কালীর মন্ত্র গুলো বেশ জাগ্রত। এই প্রবন্ধে আমরা দেবী কালীর কিছুসংখ্যক মঙ্গলদায়ক মন্ত্র নিয়ে আলোচনা করব। নিয়ম ও বিশ্বাসের সহিত মন্ত্র গুলো চর্চা করলে সুফল পাবেন।
মহাকালী মন্ত্র
কালী ধ্যানম্
ওঁ শূলাব্জপাশাং কুশপদ্মহস্তাং চতুর্ভুজাং,
ধূম্রনিভাং ত্রিনেত্রাম্।
সিংহাসনস্থাং ধৃতপীতবস্ত্রাং,
ধ্যায়েন্মহেশীম্ হৃদি কালরাত্রিম্ ৷৷
কালী গায়ত্রী
ওঁ কালিকায়ৈ বিদ্মহে শ্মশানবাসিন্যৈ ধীমহি তন্নো ঘোরে প্রচোদয়াৎ।
মন্ত্র— “ওঁ ঐং হ্রীং ক্লীং শ্রীং কালীশ্বরী সর্বজন মনোহারিণী সর্বসুখ স্তম্ভিনী সর্বরাজবশঙ্করি সর্বদুষ্টনির্দলনী সর্বস্ত্রীপুরুষাকর্ষিণি বধি শৃঙ্খলাস্ত্রোটয় ত্রোটয় সর্বশত্রুন্ ভঞ্জয় ভঞ্জয় দ্বেপীন্ নির্দলয় নির্দলয় সর্বান্ স্তম্ভয় স্তম্ভয় মোহনাস্ত্রেণ দ্বেপিণমুচ্চাটয় উচ্চাটয় সর্বং বশং কুরু কুরু স্বাহা। দেহি দেহি সর্বং কালরাত্রিকামিনী গণেশ্বর্যৈ নমঃ।”
বিধি— উপরোক্ত মন্ত্র রাত্রিতে ১২টার সময় শুদ্ধচিত্তে শুদ্ধাসনে শুধুমাত্র ১০০০ (এক হাজার) জপ করলে শত্রু বশ হয় ও সে শত্রুতা ত্যাগ করে মিত্র হয়। কাজ কর্মের বিঘ্ন দূর হয় সর্বকার্যে সাফল্য লাভ হয়।
ভদ্রকালী মন্ত্র
মন্ত্র— “ওঁ ক্রীং ক্রীং ক্রীং হুং হুং হ্রীং হ্রীং ভৈং ভদ্রকালী ভৈং হ্রীং হ্রীং হুং হুং ক্রীং ক্রীং ক্রীং স্বাহা।”
বিধি— উপরোক্ত মন্ত্রটিও কালী মন্ত্রটির মত জপ করলে সর্বকার্য সিদ্ধ হয়, ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) মন্ত্র জপ করলে সাধক অলৌকিক শক্তির অধিকারী হয়।
তারা মন্ত্র
তারা ধ্যানম্
ওঁ দেবী পন্নগভূষিতাম্ হিমরুচিং শীতাংশুশঙ্খপ্রভাং।
মুক্তারত্নপরীতকণ্ঠবলয়াং রক্তাম্বরাং বিভ্রতী ৷৷
শূলাক্ষাসি গদাধরাং সুরগণৈ বৈকুণ্ঠমুখ্যৈঃ।
স্তুতাং নিত্যং লোকত্রয়ৈকরক্ষণপরাং তারাং ত্রিনেত্রাং ভজে।।
মন্ত্র— “ওঁ ঐং হুং তারে ফট্ স্বাহা।”
বিধি— উক্ত মন্ত্র ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) জপ করলে উক্ত মন্ত্র সিদ্ধ হয়। তারপর যে কামনা করে উক্ত মন্ত্র ১০৮ বার জপ করলে কার্য সিদ্ধি হয়।
উগ্রতারা মন্ত্র
“ওঁ হ্রীং স্রীং হ্রীং ঐং হুং উগ্রতারে ফট্ স্বাহা।”
বিধি— উপরোক্ত নিয়মে জপাদি করতে হয়।
ছিন্নমস্তা মন্ত্র
ছিন্নমস্তাধ্যানম্
এনাংকাংশুপরেশভাল ফলকাং বালার্ককোটি প্রভাং, জ্বালাবদ্ধমহার্যরত্ননিচয়াং কন্দর্পদপোজ্জ্বলাম্। শূলাক্ষাং কুশপাশবেণুমুষলাংভোজাভয়ান্, বিভ্রতীং ভক্তেষ্টাং ছিন্নমস্তকাং ভগবতী ধ্যায়েদ্ হৃদজে সদা।।
ছিন্নমস্তা গায়ত্রী
“ও বিরোচন্যৈ বিদ্মহে ছিন্নমস্তায়ৈ ধীমহি তন্নো দেবীঃ প্রচোদয়াৎ।”
মন্ত্র— “ওঁ হ্লীং শ্রীং দ্বীং ছিন্নমস্তকে ফট্ স্বাহা। ওঁ শ্রীং হ্লীং হ্লীং ঐং বজ্রবৈরোচনীয়ৈ হ্লীং হ্লীং ফট্ স্বাহা।”
বিধি— উপরোক্ত মন্ত্র ১,২৫,০০০ (সওয়া লক্ষ) জপে সিদ্ধ হয়। পরে এই মন্ত্র ১০৮ বার জপ করে রাজকার্যে (বর্তমানে রাজনৈতিক কাজে) গেলে রাজকার্যে সাফল্য লাভ হয়। এই মন্ত্রের সাহায্যে বন্ধন মুক্ত হওয়া যায়।
মামলা মোকদ্দমা ও বিবাদে জয়লাভের জন্য শ্যামা মন্ত্র
শ্যামা ধ্যানম্
ওঁ ত্রৈলোক্যপূজিতপদাম্বুরুহদ্বধীতাং, কৃষ্ণাম্বুভৃৎসদৃশরূপধরাং ত্রিনেত্রাম্।
শূলসিশঙ্খ মহতীঃ স্বর্ভুজৈবহন্তী শ্যামা স্মরে শবশরীরকৃতাসনস্থাম্ ৷৷
মন্ত্র— “ওঁ শ্রীং হ্লীং ক্রাং ক্রীং ক্রৈং ক্রৌং ক্রঃ সুধারসে শ্যামে কৃষ্ণশাপং বিমোচয়ামৃতং স্রাবয় স্বাহা।
বিধি— উপরোক্ত মন্ত্র প্রত্যহ ৫০০ বার জপ করলে মামলা-মোকদ্দমা, কলহ প্রভৃতিতে জয়লাভ হয়। সমস্ত রোগাদি নাশ হয়।
প্রিয় পাঠক, আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে এবং তন্ত্র-মন্ত্রে ভালো ফলাফলের জন্য ষটকর্ম বিধিগুলো দেখুন।