যেকোন কাজে মনোযোগী হওয়ার ১১টি কৌশল

কথাতে বলে যেমন কর্ম তেমন ফল। অর্থাৎ কর্মগুলি জীবনে সুখ লাভ হয়। আর, এ জন্য যেকোনো কাজেই মনোযোগ প্রয়োজন। কারণ, মনোযোগ ছাড়া ভালো কাজ অসম্ভব। তবে কোনো কাজ দীর্ঘ হলে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই আসুন জেনে নেই দীর্ঘ কাজে মনোযোগী হওয়ার জন্য কি করা প্রয়োজন।

১. পর্যাপ্ত ঘুম: আপনার যদি পর্যাপ্ত ঘুম হয় তবে আপনি যেকোনো কিছুতে মনোনিবেশ করতে পারেন। আপনি যখন ভাল ঘুমান, তখন যেকোনো কিছুর ঘটনা মনে রাখা অনেক সহজ হয়। তাই দিনে অন্তত ছয় ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি। এটি মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে এবং অফিসের কাজে মনোযোগ দেওয়া সহজ করে তোলে। এদিকে, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আপনি সারাদিন খুব ক্লান্ত বোধ করেন এবং এটি আপনার অফিসের কাজে প্রভাব ফেলবে।

২. ধ্যান এবং ব্যায়াম: এটা সত্য যে শারীরিক ব্যায়াম এবং ধ্যান আপনার কাজ করার ক্ষমতার উপর অনেকটাই নির্ভর করে। আপনি যদি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ধ্যান এবং ব্যায়াম করেন তবে এটি আপনার মস্তিষ্কের জন্য ভাল। কারণ এটি আপনার মস্তিষ্ককে কাজ করতে সাহায্য করে। এবং ফলস্বরূপ, আপনার ফোকাস করার ক্ষমতা উন্নত হবে। বেশি না, প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট ব্যায়াম করলেই হবে। দেখবেন ভালো ফল পাবেন।

৩. বিরতি: সবকিছুর জন্য বিরতি প্রয়োজন। কারণ প্রায়শই আমরা বিরক্ত হয়ে যাই যখন কিছু করতে খুব বেশি সময় লাগে। এটি আপনাকে আপনার কাজ থেকে বিভ্রান্ত করে। তাই অফিসে যতই কাজ করুন না কেন, মাঝে মাঝে বিরতি নিন। বিরতি নিলে দেখাবে যে আপনি কাজটি করতে আগ্রহী এবং এটি সুন্দরভাবে শেষ করতে পারেন। বিরতির সময় একটু হাঁটাহাঁটিও করতে পারেন।

৪. খাবার: ডায়েটের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে আপনার শক্তির মাত্রা বাড়বে এবং যেকোনো কিছুতে ফোকাস করতে সাহায্য করবে। যাইহোক, উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় না। এটি প্রায়শই আপনি যা কিছু করেন তার উপর ফোকাস করতে অক্ষম রাখে। তাই এমন খাবার খেতে হবে যা মস্তিষ্ক ও শরীরের জন্য ভালো। ব্রকলি, ডিমের সাদা অংশ, সবুজ চা, কাঁচা হলুদ, বাদাম, সবজি এবং ওট জাতীয় কিছু খাবার চেষ্টা করুন।

৫. অনুপ্রেরণা: আরেকটি জিনিস যা শিখতে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হল প্রেরণা। এজন্য আপনি যা করছেন এবং আপনি এটা থেকে কী লাভ করছেন। এই বিষয়গুলো জানা থাকলে দেখবেন সেই কাজ করার প্রতি আপনার আগ্রহ একটু বাড়বে।

৬. একসাথে একাধিক কাজ নয়: যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজের সময় ফেসবুক, ই-মেইল বা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার বন্ধ করুন। আমাদের মস্তিষ্ক একসাথে একাধিক কাজ করার জন্য তৈরি করা হয় না। এছাড়াও একসঙ্গে একাধিক কাজ হাতে নিবেন না। যেকোনো একটি কাজ থেকে শুরু করুন।

৭. চোখ ভরে প্রকৃতি দেখুন: সবুজ গাছ দেখলে মস্তিষ্কে ইতিবাচক বার্তা যায়। তাই সকাল সাতটায় সবুজের (ঘাস) ওপর হাঁটা কতটা উপকারী তা সহজেই অনুমেয়। এমনকি প্রকৃতির ছবি দেখলে চোখ ও মস্তিষ্ককে আরাম দেয়। তাই, সময় বের করে সবুজ ও সুন্দর প্রকৃতি দেখুন।

৮. সহজ থেজে শুরু করুন: কিছু করার সময়, বিশেষ করে পড়াশোনা, সাধারণ কাজ দিয়ে শুরু করুন। কাজের মধ্যে একটা গতি চলে এলে, তখন কঠোর পরিশ্রমেও মনোযোগ দেয়া সহজ হবে।

৯. লিখে রাখুন: ভুলে যাওয়ার প্রবনতা ইদানীং প্রায় সবাইকেই জর্জরিত করেছে। তাই কিছু শোনার পর বা পড়ার পর লিখে ফেলুন। এতে আপনার বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

১০. মনোযোগ সহকারে শুনুন: কেউ কথা বলার সময় মনোযোগ দিয়ে শুনুন। আর যদি আপনি কোন বিষয়ে না বুঝেন, তাহলে জিজ্ঞাসা করুন। আর অন্যের কথা শোনা স্বাভাবিক শিষ্টাচারের অংশ।

১১. ভার্চুয়াল বিশ্বের বাইরে: ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করুন। রাতারাতি নয়, ধীরে ধীরে অনুশীলন করুন। আপনাকে প্রথমে বিশ্বাস করতে হবে যে, ইন্টারনেটের বাইরের জগত বেশ বৈচিত্র্যময়।

উপরের এই ১১টি বিষয় মেনে চলুন। এক সপ্তাহেই নিজের কর্ম ক্ষমতা সম্পর্কে বুঝতে পারবেন।

Previous Next
No Comments
Add Comment
comment url